নিউজ ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনাভাইরাস বাংলাদেশে আবির্ভাব হওয়ার পর প্রতিটি জেলায় প্রতিদিন কোন না কোন জায়গায় আক্রান্ত হওয়ার খবর, ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, এবার বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলায় ১৪ জন নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় শুক্রবারে নতুন করে ১৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ নিয়ে বিভাগে ৮৯ জন রোগী শনাক্ত হলেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে এই বিভাগে আরও দুজন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ নিয়ে বিভাগে ৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন।
বরিশাল বিভাগে গত ৯ এপ্রিল প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ৫ জেলায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হলেও গত ১৫ দিনে ভোলায় কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। কিন্ত গতকাল শুক্রবার প্রথমবারের মতো ভোলায় ২জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুস্থ হওয়া ২জন বরগুনা জেনারেল হাসপাতলে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই ২জন গতকাল শুক্রবার বিকেলে ছাড়পত্র পেয়ে বাড়ি ফেরেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, এই বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যাগত দিক থেকে বরিশাল জেলা সর্বোচ্চ অবস্থায় রয়েছে।
এ জেলায় নতুন আক্রান্ত একজনসহ ৩৪ জন, বরগুনায় নতুন ৫ জনসহ ২৩ জন, পটুয়াখালীতে নতুন ৬ জনসহ ১৯ জন, ঝালকাঠিতে ৬ জন, পিরোজপুরে ৫ জন ও ভোলায় ২ জন। এ ছাড়াও এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বরিশালের মুলাদী উপজেলায় ১জন, পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় ১জন এবং বরগুনার আমতলী উপজেলায় ১জন ও বেতাগী উপজেলায় ১জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
৬ জেলায় আক্রান্ত এই ৮৯ জনের মধ্যে ২জন ভারতীয় নাগরিক এবং ১৬ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিদেশী নাগরিকসহ ভিন্ন জেলা থেকে আগত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গত ১০ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ বিভাগের ৬ জেলায় ৮ হাজার ৮৩৮ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে ৭ হাজার ৮০৩ জনকে। যাদের ৪ হাজার ৫৯৬ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে বিভাগের বিভিন্ন জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৫০৭ জন। আর ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ২৪২ জনকে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের ৬ জেলায় ২২৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে এবং বিভাগের ৬ জেলায় ৩৪০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, বিভাগের ভোলা জেলায় প্রথম ২জন রোগী শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ৬ জেলাতেই এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলো। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার সব ধরনের প্রস্তুতি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।