নিজস্ব প্রতিবেদক :
বেশীর ভাগ নারী উত্যক্তকারী বখাটেরা প্রশাসনের সাঁড়াশী অভিযানের কারণে আত্মগোপনে চলে গেলেও কিছু বখাটে প্রশাসনের রক্তচক্ষুর আড়ালে তাদের নেশা চরিতার্থ করে যাচ্ছে। এমনই এক বখাটের সন্ধান পাওয়া গেছে নগরীর বায়েজিদ থানাধীন নয়ারহাট নেজামে হামজা এলাকার সুফিয়ান হাজী বাড়ীর মৃত আবুল খায়ের ড্রাইভারের ছেলে আমীর হোসেন ড্রাইভার প্রকাশ (ইয়াবা সামির)। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ইয়াবা সামিরের নেশা হলো অক্সিজেন, বায়েজিদ, অনন্যা আবাসিক , আতুরার ডিপু, চালিতাতলী এবং ওয়াজেদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে স্কুল ছাত্রী এবং চাকরীজীবী যুবতী নারীদেরকে বিরক্ত করা।
বিবাহিত-অবিবাহিত নারীদেরকে তার পাতানো প্রেমের ফাঁদে ফেলে টাকা/ইজ্জত লুটে নেওয়া তার আসল উদ্দেশ্য। প্রবাসীর স্ত্রীরাই তার মূল টার্গেট। কোন মহিলাকে তার আয়ত্ত্বে আনতে পারলে কিছুদিন তার সাথে প্রেমের অভিনয় করে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তুলে। পরবর্তীতে উক্ত নারীর সাথে অসামাজিক কার্যকলাপ করে ভিডিও ধারণ করে তাকে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। লোকলজ্জা এবং সংসার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে এসব নির্যাতিত মহিলারা মুখ খুলতে সাহস পান না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সময় অন্যের প্রাইভেট কার চালাতো আমীর ড্রাইভার। ২০১০ সালের দিকে পাঁচলাইশ এলাকার জনৈক ব্যবসায়ীর প্রাইভেট কার চালাতো আমীর। উক্ত ব্যবসায়ীর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়েকে সে স্কুলে আনা- নেওয়া করতো। সুযোগ বুঝে ঐ ছাত্রীকে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে। কিন্তু ঐ ছাত্রী অজানা কারণে আত্মহত্যা করেন।এরপর আমীর চট্টগ্রাম ওয়াসায় পানির ভ্যান চালকের চাকরী পায়। কিন্তু ২০১৪ সালে নেজামে হামজা এলাকার কাঠ মিস্ত্রি দেলোয়ারের কন্যা পারভীন নামের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের কারণে (বায়েজিদ থানার মামলা নং-২২# ২১/১০/২০১৪) কারাবরণ করে চাকরিচ্যুত হয়।
এলাকার লোকজন জানায় আমির ড্রাইভারের পিতা খায়ের ড্রাইভারও ওয়াসার ড্রাইভার ছিলেন। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ ছিলো। কিন্তু আমীর ড্রাইভার হঠাৎ করে লাখ লাখ টাকার মালিক হওয়ায় অনেকের মনে কৌতুহল রয়েছে। এলাকার বেশীরভাগ লোকের তথ্যমতে আমীর ইয়াবা কারবারের সাথেও সম্পৃক্ত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, আমীর ড্রাইভার তার অপকর্ম থেকে বাঁচতে বর্তমানে যুবলীগের প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় রয়েছে। এই সুবাধে সে যা ইচ্ছা তাই করে। ইদানীং থানায়ও যাওয়া -আসা করে, কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সাথে তার ওঠা-বসাও হয়।
এই বখাটের উৎপাতে অনেক সচেতন অভিভাবক পরিবার নিয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। সবার আতঙ্ক কখন কাকে জিম্মী করে মোটা অংকের টাকা দাবী বা সম্ভ্রম হানি করে এই প্রতারক। এই প্রতারক আমীরের ব্যাপারে জানতে চাইলে বায়েজিদ থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, এই ধরণের কোন ব্যক্তির ব্যপারে আমার জানা নেই। কেউ কোন অভিযোগ করেনি, অভিযোগ করলে তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তার ধর্ষণ মামলার রেফারেন্স নিয়ে তার ব্যক্তিগত তথ্য উপাত্ত যাচাই করে দেখা হবে।