নিউজ ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনাভাইরাসটিতে ১৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশে। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে আরো ৬৮৮ জন। এতে দেশে করভিড-১৯ এ মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১০ হাজার ১৪৩ জনে। এছাড়াও সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন আরো ১৪৭ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ২১০ জন।
আজ সোমবার (৪ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। এসময় তিনি বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৬ হাজার ৩১৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ৬ হাজার ২৬০টি নমুনা। এ নিয়ে সারাদেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮৭ হাজার ৬৯৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরো ৬৮৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানানতিনি। এটি গতকালের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে আজকে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ১৪৩ জন। কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন আরো ৫ জন। এ নিয়ে সারা দেশে মৃত্যু হয়েছে ১৮২ জনের। এছাড়াও সুস্থ হয়েছেন আরো ১৪৭ জন বাড়িতে ফিরেছে। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ২১০ জন।
গতকাল রবিবারের (৩ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে জানানো হয়, বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে দুজনের। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৫ জন। আজ সোমবারের বুলেটিনে নতুন করে মারা যাওয়া ৫ জনের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তারা সবাই পুরুষ। ৩জন ঢাকার, ১জন সিলেট ও ১ জন ময়মনসিংহের বাসিন্দা। ৩ জন ষাটোর্ধ্ব, একজন পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং ৩জন ত্রিশোর্ধ্ব।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৪৭ জন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন, তাদের মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ১৩ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১১ জন, ঢাকা মহানগর হাসপাতালের ৭ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৩ জন, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতালের ৪ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৪ জন রয়েছেন। এছাড়া ঢাকা বিভাগের অন্যান্য হাসপাতালের ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৭ জন, রাজশাহী বিভাগের ৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের ১৭ জন, রংপুর বিভাগের ৪ জন এবং সিএমএইচের ১৪ জন রয়েছেন।
বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন নেয়া হয়েছে ৯০ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশন আছেন ১ হাজার ৬৩৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছে ৯১ জন এবং এ পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছে ১ হাজার ১৭৩ জন। ঢাকা রাজধানীসহ সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ৯ হাজার ৬৩৮টি। তন্মধ্যে রাজধানী ঢাকায় রয়েছে ৩ হাজার ৯৪৪টি এবং রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে রয়েছে ৫ হাজার ৬৯৪টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক সব মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৭৪২ জনকে এবং এ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে ১ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩৩৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২৮ হাজার ৫৪৮ জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছে ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৪০১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪১ হাজার ৯৩৩ জন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।
করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে। তবে ছড়িয়ে পড়া এ করোনাভাইরাস ক্রমে গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ লক্ষ ৩৮ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার। তবে সাড়ে ১১ লক্ষ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও। প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। নিয়েছে আরো নানা পদক্ষেপ। যদিও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় খুলেছে পোশাক কারখানা। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করা না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি-না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের।