ঈশাত জামান মুন্না,
লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি:
ছেলের আবদার মিটাতে দিনমজুর বাবা কিনে দিল স্কুল যাতায়াত এর জন্য ঘোড়া।
হাস্যকর ও বটে আবার ডিজিটাল যুগে আদীমযুগে ফিরে যাওয়ার ও অনুপ্রেরণাবটে,,
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নে সীমান্তঘেসা দীনমজুরের ছেলে মাইদুল ইসলাম।চন্দ্রপুর আদর্শ বিদ্যা নিকেতনের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।সে প্রতিদিন ৩ কিলো মিটার পথ পারি দিয়ে ঘোড়ায় পিটে চরে স্কুলে যায়।
সে কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের কাটাতার ঘেশা খামার ভাতি গ্রামের দিনমজুর লিয়াকত আলী ছেলে।দুই ভাই এক বোন । সবার মেজ মাইদুল ইসলাম।তার বড় বোন লতিফা খাতুন চন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগে নবম শ্রেনীর ছাত্রী।মাইদুল ইসলাম পড়াশুনা করে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
জানা গেছে, মাইদুল ইসলাম ৫ম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার দাদার একটি ঘোড়া ছিল ঘোড়াটি দেখেই ভালবাসতে থাকে মাইদুল। একসময় তার দাদা অভাবের তাড়নায় ঘোড়াটি বিক্রি করেন।ঘোড়া বিক্রির পর থেকে ঘোড়ার জন্য তার বাবার কাছে প্রতি দিনই কাঁদতে থাকে মাইদুল ইসলাম
তার বাবা লিয়াকত আলী উপায়অন্তর না পেয়ে দিনমজুরের কিছু টাকা সংগ্রহ করে অনেক কষ্টে ৬ হাজার টাকা দিয়ে স্থানীয় বালাপাড়া হাটে ছয় মাসের একটি ঘোড়ার বাচ্চা কিনে দেন। সেই ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন পালন করতে থাকেন মাইদুল। তার প্রিয় ঘোড়াটির নাম রাখেন বাহাদুর।
তার ইচ্ছে বাহাদুরের পিঠে চড়ে স্কুলে যাবে।
মাইদুল ইসলাম বলেন, ঘোড়ার পিঠে চড়ে প্রথম যেদিন স্কুলে যাই সেদিন থেকে স্কুলের সকল ছাত্র,ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা গণ আমাকে একনামে চিনেন। স্কুলে আমার ঘোড়া বাহাদুর কে দেখে সবাই আনন্দ পান।
আমার বন্ধুরা ঘোড়ার পিঠে উঠতে চায় আমিও তাদেরকে ঘোড়ার পিঠে উঠাই। এখন আমার ইচ্ছে পড়াশুনা করে ডাক্তার হওয়ার।
তার বাবা লিয়াকত আলী বলেন, আমার ছেলে ঘোড়া দেখে পাগল হয়ে গিয়েছিল তাই দিনমজুরী করে টাকা সংগ্রহ করে অনেক কষ্টে ছেলে কে ঘোড়া কিনে দেই। আমার ইচ্ছে দিনমুজুরি করে ছেলে মেয়েকে পড়াশুনা করাব।
চন্দ্রপুর আদর্শ বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন, মাইদুল ইসলাম দিনমুজুরের ছেলে হলেও খুব মেধাবী।সে ঘোড়া নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসায় সবাই আনন্দ পায়।।