বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক এক উপসর্গ নিয়ে দেখা দিয়েছে বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশে যারা ধূমপান করেন তারাই সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাসের। বিশেষজ্ঞদের মতে ধূমপান যারা করেন তাদের ফুসফুস দুর্বল থাকে। কারণ এসব দুর্বল মানুষকে বেছে নেয় করোনাভাইরাস তাই এখনই যারা ধূমপান করেন তাদের বিপদটা দ্বিগুণ আকারে বেড়ে গেল তাই ধূমপান ছাড়ার এখনই সময়। ধূমপান একদিকে যেমন ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে হৃদ্রোগ, ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদির ঝুঁকিও বাড়ায়। ফলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত অনেক বেড়ে যায়।
আবার করোনা সংক্রমিত হলে অন্যদের তুলনায় ধূমপায়ীদের জটিলতা বেশি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কাজেই এই ভাইরাস প্রতিরোধে ধূমপান ছাড়ার কোনো বিকল্প নেই। আর এই সময়টাই হতে পারে এর জন্য শ্রেষ্ঠ সময়। ধূমপান ছেড়ে দিলে বিরক্তি, অস্থিরতা, মনোযোগে সমস্যা, ধূমপানের তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছাড়া মারাত্মক কোনো প্রত্যাহারজনিত সমস্যা হয় না। তাই ধূমপান ছাড়তে হলে কয়েকটি বিষয়ের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে: ১. ধূমপানের তীব্র ইচ্ছাকে দমন করুন। যেসব পরিস্থিতি ধূমপানের ইচ্ছাকে বাড়ায়, সেগুলো শনাক্ত করে মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন। প্রাথমিকভাবে এই আকর্ষণ তীব্র ও নিয়ন্ত্রণহীন মনে হলেও কিছু সময় পরই তা কমে যায়। কাজেই মনোযোগ অন্য কিছুতে সরিয়ে নিন।
ধূমপানের ইচ্ছা হলেই পানি পান করুন। ধীর ও গভীরভাবে শ্বাস নিন-ছাড়ুন। ধূমপানের কুফলগুলো স্মরণ করুন। ২.যেকোনো নেতিবাচক চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করুন। বিকল্প ইতিবাচক চিন্তা করুন, নিজের ওপর আস্থা রাখুন। ৩.সুস্থ জীবনধারা মেনে চলুন। নিয়মিত ঘুম, খাওয়া, কাজ, বিনোদন, ব্যায়ামের রুটিন তৈরি করে মেনে চলুন। অধূমপায়ী বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, তাদের কাছ থেকে নৈতিক সমর্থন নিন। পরিবারকে গুণগত সময় দিন। প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ খাবার বেশি খান। ৪.এ সময় ধূমপায়ী বন্ধু বা সহকর্মীর সঙ্গে ধূমপানের সুযোগ কম। তারপরও কেউ আহ্বান করলে দৃঢ়তার সঙ্গে না বলুন।
৫.করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত কিংবা অন্য যেকোনো প্রকার উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, ভীতি, হতাশা, রাগ অথবা ঘুমের সমস্যা দূর করতে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অবলম্বন করুন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ৬.ধূমপানের প্রত্যাহারজনিত তীব্র সমস্যা দূর করতে এবং পরে ধূমপানের আগ্রহ কমাতে অনেক সময় নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি; নিকোটিনযুক্ত চুইংগাম, লজেন্স, ত্বকে লাগানোর প্যাচ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তবে নিকোটিনসমৃদ্ধ অ্যারোসল ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটিয়ে আরও ক্ষতি করতে পারে। তাই নিকোটিন স্প্রে হিসেবে না নেওয়াই ভালো।