আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আজকের দিনটি নিউজিল্যান্ডের জন্য ছিল মাইলফলক। কেননা করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর সাথে সাথে লকডাউন জারির পর এই প্রথম দেশটির কোনো হাসপাতালে একজনও করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় নেই। সরকারের তরফে আজ বুধবার ২৭ মে সংবাদ সম্মেলন করে এ সুসংবাদ জানানো হয়।স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক ডা. অ্যাশলে ব্লুমফির্ড সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘বর্তমানে দেশের কোনো হাসপাতালে আর একজন করোনা রোগীও নেই যিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সবশেষ সুস্থ হয়ে মিডলমোর হাসপাতাল থেকে একজন করোনা রোগী ছাড়া পাওয়ার পর এই সংখ্যাটা এখন শূন্য।’
তিনি জানান, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন কিন্তু সেই সংখ্যাটা কখনোই খুব বেশি ছিল না। অবশেষে কয়েক মাস পর আমাদের হাসপাতালগুলোতে এমন কোনো করোনা রোগী নেই যিনি করোনা আক্রান্ত। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২১, তারা বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।’গত একদিনে নতুন করে কোনো করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়নি। এছাড়া টানা পঞ্চম দিন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে কেউ শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫০৪। মারা গেছে ২১ জন; সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৬২ জন।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় নিউজিল্যান্ড সফল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ দেশটিতে যখন মাত্র ৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল তখনই অর্থাৎ ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ড আর্ডার্ন ঘোষণা দেন, নিউজিল্যান্ড ভ্রমণে যারা আসবেন তাদেরকে বাধ্যতামূলক ২ সপ্তাহের সেল্ফ আইসোলেশনে থাকতে হবে।১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অন্য দেশের কোনো পর্যটকের নিউজিল্যান্ডে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। সেদিন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৮ জন। এরপর ২৩ মার্চ দেশজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেন। অথচ তখনো দেশটিতে করোনায় কেউ মারা যায়নি; আক্রান্ত ছিল মাত্র ১০২ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগাম সতর্কতামূলক কঠোর পদক্ষেপ দেশটির করোনা প্রতিরোধ সাফল্যের অন্যতম হাতিয়ার। এরপর টানা প্রায় ২ মাস দেশ লকডাউন থাকার পর গত ১৪ মে থেকে ধীরে কিছু ব্যবসা কেন্দ্র ও জনসমাগমস্থল খুলে দিতে শুরু করে সরকার। অনেকটা শিথিল হয়েছে লকডাউন।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে, মানুষ বারে কিংবা পার্কে যেতে পারছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সতর্ক করে দিয়েছেন যেন সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা হয়। নিউজিল্যান্ড এখন ‘এলার্ট-২’ স্তরে রয়েছে; যা দিয়ে বোঝায়, রোগটি প্রতিরোধে করা গেছে তবে এখনো গোষ্ঠী সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।