সুনামগঞ্জের ছাতকে সন্তান রেখে স্ত্রীকে মারধর করে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে স্বামী। স্ত্রীকে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দিয়েও সে ক্ষান্ত হয়নি। সংঘবদ্ধ হয়ে শশুর বাড়িতে গিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে ক্ষতি সাধন করেছে জামাতা। এসময় তাদের বাঁধা দিতে এসে নারীসহ ৪ ব্যক্তি আহত হয়েছে। গুরুতর আহত তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ ঘটনায় স্বামী সহ ১১জনের নাম উল্লেখ করে রোববার ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে স্ত্রী।
জানা যায়, পাঁচ বছর আগে ছাতক উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের বারগাপি (কল্যাণপুর) গ্রামের জফুর আলীর কন্যা নাইমা বেগমকে আনুষ্ঠানিক ভাবে একই গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে আবদুল কাহারের সাথে বিয়ে হয়। তাদের রয়েছে আলিয়া বেগম নামের সাড়ে ৩বছরের এক কন্যা সন্তান। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রী নাইমাকে অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছিল স্বামী। স্বামীর যৌতুকের দাবী মিঠাতে পিতার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা এনে দেয়া হয়।
কিছুদিন পর পিতার বাড়ি থেকে আরও আড়াই লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য স্ত্রীকে চাঁপ দিলে সে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী ২৮ আগষ্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্ত্রীকে মারধর করে শিশু কন্যা আলিয়াকে রেখে পাঠিয়ে দেয় পিত্রালয়ে। পর দিন (২৯ আগষ্ট) সকালে সহযোগিদের নিয়ে শশুর বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে জামাতা। এসময় বাঁধা দিতে এসে নারীসহ ৪ব্যক্তি আহত হয়। গুরুতর আহত ছাইদ মিয়া (১৭), আলিমা বেগম (২২) ও সাকিব মিয়া (২২) কে কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এছাড়া আহত ছাদিক মিয়া (৩০)কে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় স্ত্রী নাইমা বেগম বাদী হয়ে রোববার স্বামী আবদুল কাহারসহ ১১জনের নাম উল্লেখ করে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।এদিকে হামলা-মারধরের ঘটনায় স্ত্রী নাইমা বেগম, শশুর জফুর আলী, সম্বন্ধিক ছাদিক মিয়াসহ ৬জনের বিরুদ্ধে রোববার ছাতক থানায় পাল্টা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের বারগোপি (কল্যাণপুর) গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে জামাতা আবদুল কাহার। আবদুল কাহার বলেন, বিয়ের পর থেকে স্ত্রী নাইমা তাকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছিল। ২৮ আগষ্ট সকালে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এসব বিষয় স্ত্রী তার পিতা ও ভাইদের কাছে অতি উৎসাহি হয়ে বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দিন রাত সাড়ে ১০ টায় শশুর জফুর আলীর নেতৃত্বে দেশিও অস্ত্র নিয়ে বসত ঘরে এসে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে প্রাণে মারার জন্য হামলা চালিয়ে আহত করে। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে আহত হয়েছেন আবদুল হামিদ ও তার স্ত্রী ফেরদৌস বেগম। হামলাকারীরা একটি মোবাইল সেট, নগদ টাকা ও আট আনা ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আবদুল কাহারকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও আবদুল হামিদকে কৈতক হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন জাহিদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই পলাশ চন্দ্র দাশ।
ছাতক প্রতিনিধি::