
নিজস্ব প্রতিবেদক । অজানা বাংলাদেশ
আরিফুল ইসলাম সুমন|ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
দলটির চলমান সংকট নিরসনে ও দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং আগামি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা বিএনপি নিজেদের আন্ত দলীয় কোন্দল মিটিয়ে এক প্লাটফর্মে এসে দাঁড়িয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরাইল উপজেলা বিএনপিতে কোন্দল প্রায় দীর্ঘ বছর। বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন মাস্টার ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান এই ত্রি-ধারায় ছিল উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
বিগত এক-এগারোতে ঘটে যাওয়া নানা বিষয় নিয়েই মূলত এ অন্তঃকোন্দলের বহিঃপ্রকাশ হয়েছিল সরাইল উপজেলা বিএনপিতে। পরবর্তীতে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার গণসংযোগে বাধা ও হামলা এবং তাকে সরাইলে অবাঞ্চিত ঘোষণার পর এখানে দলটি নতুন সংকটে পড়ে কমিটি গঠন এবং সভাপতি ও সেক্রেটারী পদ নিয়ে।
বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান দলীয় প্রতীকে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনে স্থানীয় বিএনপির একটি গ্রুপ গোপনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধীতা করে। এটি নিয়েও এখানকার বিএনপির মধ্যে মতবিরোধ বিদ্যমান ছিল। এসব নিয়ে এখানে কেন্দ্রীয় নানা কর্মসূচি তারা পালন করেছে আলাদা আলাদাভাবে।
সর্বশেষ টানা পাঁচ বছর প্রতীক্ষার পর সরাইল উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সরাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান সভাপতি এবং আনোয়ার হোসেন মাস্টার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করে ১৮৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ১২ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি।
উপজেলা বিএনপি সূত্র জানায়, বিগত ২০১৪ সালের প্রথম দিকে অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান সভাপতি ও আনোয়ার হোসেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা দেয় জেলা কমিটি। এর দুই বছর পর সিনিয়র সহসভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর, যুগ্ম সম্পাদক আজমল হোসেন ছোটন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল করিম রিপনসহ পাঁচ সদস্য উপজেলা কমিটিতে অনুমোদন পায়।
এ কমিটি দিয়ে উপজেলা বিএনপি চলে আরো তিন বছর।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে পাঁচ সদস্যের কমিটি দুই শতাধিক সদস্যের একটি বিশাল পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য জেলা কমিটিতে জমা দেওয়া হয়। দলীয় গঠনতন্ত্রের বিধি অনুযায়ী ওই কমিটি তখন অনুমোদিত হয়নি।
দীর্ঘ সময় পর প্রস্তাবিত ওই কমিটির অনেক নেতাকর্মীর নাম কাটছাঁট করে ১৮৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ১২ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গত মঙ্গলবার অনুমোদন দিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা (কচি) ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন। এতে এখানকার দলীয় নেতা-কর্মীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। আর এই পুর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদনের মধ্য দিয়েই উপজেলা বিএনপিতে দীর্ঘদিনের কোন্দলের অবসান হলো।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান জানান, সরাইল বিএনপি এখন এক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়েছে। যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি একসঙ্গে কাজ করবে। এখন উপজেলা বিএনপির প্রধান কাজ হবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায় করা।