‘যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ’ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণ কাজে নি¤œমানের ইট, বালি ও সিমেন্টের মিশ্রনে ফাঁকি দিয়ে সরকারি অর্থ লোপাট করা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন বরাদ্ধ পাওয়া নির্মাণাধীন বাস গৃহের এক মালিক। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা গেছে, উপজেলার মান্দার বাড়িয়া ইউনিয়নের হুদাশ্রীরামপুর গ্রামে দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মান প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি বাসগৃহের জন্য সরকার ২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬০ টাকা বরাদ্ধ করে। নিয়ম অনুযায়ী ১ নং ইট দিয়ে নির্মাণ কাজ করার কথা।
এজন্য সংশ্লিষ্ট বাস গৃহের জন্য একজনকে সভাপতি ও এক জনকে সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদারকি কমিটিও করা হয়। বরাদ্ধকৃত অর্থে একটি রান্নঘর বিশিষ্ট দুই রুম ও আলাদা বাথ রুম নির্মাণ করা হবে। সরেজমিনে দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ বরাদ্ধ পাওয়া হুদাশৃীরামপুর গ্রামের মমিনুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় নানা অনিয়মের চিত্র। বাসগৃহ নির্মাণে নি¤œমানের উপকরণ ব্যবহারের কারেনে উঠে যাচ্ছে পলেস্তার, দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল, পঁচা কাঠ দিয়ে সাওয়া হয়েছে টিন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকাজে অনিয়ম ও নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় ঘরের মেঝের পলেস্তার উঠে যাচ্ছে এবং দেয়ালে ফাটল ধরেছে । নিয়ম অনুযায়ী মজবুত করে ঘর নির্মাণ করলে হয়তো মমিনুরকে এই ঘড় নিয়ে বিপাকে পরতে হতো না। তারা আরো বলেন ঘর নির্মাণে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সরকারের টাকা লুটপাট করে খাচ্ছে কিছু ব্যক্তি। বাসগৃহ বরাদ্ধ পাওয়া মমিনুর রহমান স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এ প্রকল্প বাস্তবায় কমিটির সভাপতি শফিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আমি গরিব মানুষ এবং আমার প্রতিবন্ধি ছেলের জন্য এ ঘরটি পেতে চেয়ারম্যানকে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
বাসগৃহ নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই নাম্বার বিহিন পুরাতন ইট দিয়ে কাজ শুরু করে। এসময় প্রতি বস্তা সিমেন্টের সাথে ১৬ কড়ায় বালু মিশিয়ে দেয়াল গাথার পরের দিন দেয়াল ধসে পরে। পরের দিন তারাহুরো করে আবারো সে দেয়াল গাথা হয়। তিনি বলেন নিয়ম বর্হিভূত কাজ করতে নিশেধ করলে ঘরের টাকা ফিরে যাবে এবং এভাবেই কাজ হবে বলে হুমকি দেয় চেয়ারম্যান। ইঞ্জিনিয়ারকে এ বিষয়ে একাধিকবার বললেও তিনি কোন কর্নপাত করেননি বলে জানান মমিনুর রহমান । তিনি আরও বলেন বাসগৃহ নির্মান সামগ্রী আনতেও ভাড়ার টাকা তাকেই গুনতে হয়েছে।
মমিনুর রহমান বলেন এখনো ঘড়ে উঠতে পরলাম না, এখনিই ঘড়ের মেঝের পলেস্তর উঠে যাচ্ছে, বিভিন্ন যায়গায় দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। কয়েক দিন আগে হালকা বাতাসে ঘড়ের চাল উড়ে গিয়েছিলো চেয়ারম্যানকে জানালে রাগানিত্ব ভাষায় নিজের ঘর নিজে ঠিক করে নিতে বলেন তিনি। মমিনুর দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বলেন এমন ঘরের দরকার ছিলো না, মাটির ভাঙ্গা ঘরেই না হয় থাকতাম ছেলে আর বউকে নিয়ে। তবে ইউপি চেয়ারম্যান শফিদুল ইসলাম মোবাইলে জানান, ঝড়ের কারণে তাদের রান্না ঘরের টিনের চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমি বলেছি রান্নাঘরের চাল ঠিক করে দেবো। কিন্তু ২০ হাজার টাকা নিয়েছি ঘরের জন্য এটা সঠিক না।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেরুন নেছা বলেন, আমি ছুটিতে আছি। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। কর্মস্থলে থাকলে হয়তো দেখা যেত। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাশ্বতি শীল মোবাইলে জানান, আমি ছুটিতে থাকা অবস্থায় এ ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারনে আমি বিষয়টি জানিনা। তবে এমন একটি ঘটনায় আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। আমি দু’পক্ষকেই ডেকে তাদের কাছে এ বিষযয়ে জানব এবং খোঁজখবর নিয়ে সঠিক ব্যবস্থা নেব।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি;