আজ শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০) বিকেল ০৪ ঘটিকায় চট্টগ্রাম চেরাগী পাহাড় মোড়ে সমাবেশ করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন,পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ,পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ,গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম। সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের নগর শাখার সভানেত্রী রেশমি মারমা সভাপতিত্বে এবং গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নগর শাখার নেতা জিকো চাকমার স ালনায় বক্তব্য রাখেন একই সংগঠনের নগর সহ-সভাপতি শুভ চাক এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চবি শাখার নেতা রোনাল চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত এক মাসের মধ্যে বান্দরবানের লামায় এক পাহাড়ি নারীকে গণধর্ষণ, মহালছড়িতে ৮ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ, তাইন্দং খেওয়াপাড়ায় এক পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের প্রচেষ্টা, বাঘাইছড়ি সাজেকে এক নারীকে ধর্ষণের প্রচেষ্টা, দিঘীনালায় এক পুলিশ কনস্টেবল কর্তৃক ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কিছু ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ধর্ষকদের পক্ষালম্বন করে সালিশের নামে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে অপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা চালিয়েছে।
আর ধর্ষণকারী দুর্বৃত্তরা ক্ষমতাশালী লোকজনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় ধর্ষণকারীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত হচ্ছে না। বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারীদের উপর এ যাবত যতগুলো ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে তার কোনটিরই সঠিক বিচার হয়নি। এমনকি ধর্ষণের মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট পর্যন্ত গোপন করা হয়ে থাকে। মূলত এর মাধ্যমেই অপরাধীদের অপরাধ কর্মে আরো উৎসাহিত করা হয়। যার ফলে নারী-শিশুর ওপর নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। সমাবেশে সভানত্রী রেশমি মারমা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত সংঘটিত ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও দাবির জানি জানান।
একই সাথে তিনি সেনাবাহিনী- সেটলার বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক সমস্যা চিহ্নিত করে রাজনৈতিক সমাধানের জোর দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রামে যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সরকার দায়ী থাকবে। উল্লেখ্য, বুধবার দিবাগত গভীর রাতে (রাত ২:৩০টা) ৯ জনের একদল সেটেলার বাঙালি দা-ছুরিসহ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ের পাশে ভিকটিম ওই নারীর বাড়িতে হানা দেয়।
দুর্বৃত্তরা দরজা ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তার মা বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা ভুক্তভোগী নারী ও তার মা’সহ বুড়ো বাবাকে দড়ি দিয়ে বাঁধে। এরপর মা-বাবাকে আলাদা একটি রুমে দরজা বন্ধ করে রাখে। পরে ওই নারীকে আরেকটি রুমে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে ভিকটিমের মায়ের চোখের অপারেশনের জন্য গচ্ছিত রাখা নগদ ৮ হাজার টাকা, তিনটি মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিম নারীর মা বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এখনো ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করেনি।