পরিবারের ভাগ্যে থাকা গুড়াতে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের হতদরিদ্র পরিবার, মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে শুরু করে সবাই প্রবাসে গিয়ে থাকে, কিন্তু সেই প্রবাসে গিয়ে কষ্ট অর্জিত টাকা পরিবারের কাছে পাঠানোর পর কিছু অবশিষ্ট টাকা প্রবাসীদের কাছে জমা থাকে, কিন্তু সেই টাকা একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন কৌশলে ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার শিলক মিনাগাজির টিলার বাসিন্দা, ছাইদুল হকের ছেলে প্রতারক মোঃ শামীম হোসেন প্রতারক চক্রের মূল হোতা, এই প্রতারক দুবাইয়ের বিভিন্ন জায়গার প্রবাসীদের টার্গেট করে বার ও হোটেল ব্যবসা শুরু করবে বলে বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রলোভন দেখায়, একটি নির্ধারিত জায়গায় নিয়ে গিয়ে প্রবাসীদেরকে বোঝায় তিনি এখানে কিছুদিনের মধ্যে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করবে, তাদেরকে ব্যবসায় শরিক করার প্রলোভন দেখিয়ে একেক জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নেই লক্ষ লক্ষ টাকা।
চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা আজম আলীর, ছেলে মোঃ ইউসুফ আলীর কাছ থেকে দুবাইয়ের ১২,৫০০ দেরহাম, যা বাংলা টাকায় ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় শামীম হোসেন। মোহাম্মদ ইউসুফ আলীকে ব্যবসায়ীর অংশীদার বানাবে বলে ১২,৫০০ দেরহাম যা বাংলাদেশী টাকায় ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়, ইউসুফ আলীর তার প্রমাণ হিসেবে একটি ইউ সি বি এল ব্যাংকের চেক এবং স্টাম্পে চুক্তি করে নেন, UCBL ব্যাংকের চেক নাম্বার ১১৩৯৯৪০/ এই চেকের মধ্যে ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা উল্লেখ রয়েছে।
মোহাম্মদ ইউসুফ আলী প্রতারক শামীম হোসেন এর কাছ থেকে যে ট্রাম্পের চুক্তি করেছেন তার সিরিয়াল নাম্বার।০২৬৪৫৭২/০২৬৪৫৭৩/০২৬৪৫৭৪।
অর্থ আত্মসাৎ মামলা নাম্বার,CR 710/22
পটিয়ার আরেক বাসিন্দা হাসমত আলীর ছেলে, জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে প্রতারক শামিম হোসেন হাতিয়ে নেয়, দুবাইয়ের দুই হাজার দেরহাম যা বাংলা টাকায় ৬৫,০০০ টাকার মতো, জিয়াউর রহমানকে প্রতারক শামীম আশ্বস্ত করে বলেছেন যে তিনি একটা অভিজাত হোটেল খুলবেন যেখানে থাকবে বার ডিস্কো পর্যটক বিনোদনের সব আয়োজন। প্রবাসী জিয়াউর রহমান বলেন আমি সাধারণ পরিবারের একটা ছেলে প্রবাসে এসেছি পরিবারের চাহিদা মেটাতে।
সারা মাসের বেতন যা পায় পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দিই নিজের খরচের জন্য কিছু টাকা অবশিষ্ট নিজের জন্য রাখি সেই টাকা থেকে কিছু মুনাফার লোভে শামীমের হাতে টাকাগুলো তুলে দেই। এখন বাংলাদেশের প্রশাসনের কাছে আমার আকুল আবেদন শামীম হোসেন এর কাজ থেকে আমাদের টাকাগুলো যেভাবেই হোক উদ্ধার করে দিন,টাকাগুলো মাথার গাম পায়ে ফেলে উপার্জন করেছি টাকাগুলো উদ্ধার করে দিলে প্রশাসনের কাছে কৃতজ্ঞ থাকিব।
প্রতারক শামীম দুই একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্ষান্ত হননি, চট্টগ্রামের আনোয়ারার বাসিন্দা মরহুম মাওলানা আব্দুর সালামের ছেলে, মোস্তাক আহমেদ এর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়,১৫০০ দেরহাম যা বাংলা টাকায় ৪৫ হাজার টাকার মতো। প্রবাসী মোস্তাক আহমেদ বলেন প্রতারক শামীম আমাকে ব্যবসার অংশীদারিত্ব দিবে বলে টাকাগুলো নিয়েছে, এই টাকাগুলো জমানোর জন্য অনেক কষ্ট করেছি পরিবার পরিজনদের টাকা কম পাঠিয়েছি অনেক কষ্ট করে টাকাগুলো জমানোর পর এই প্রতারক শামীম ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে টাকাগুলো হাতিয়ে নিয়েছে।
চট্টগ্রামের পটিয়া কালার পোলের বাসিন্দা আব্দুল গফুরের ছেলে, জয়নাল এর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে, ১০ হাজার দেরহাম যা বাংলা টাকায় ৩ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা, এভাবে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে আরো কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক শামীম।
প্রতারক শামীমের কাজ হল বিভিন্ন দেশে গিয়ে বিশেষ করে চট্টগ্রামের প্রবাসীদের টার্গেট করে নিজের পরিচয় উন্মোচন করে, যে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হলেও আনারস পথিক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে বলে প্রবাসীদের জানায়, প্রবাসীরাও তাঁকে সরল মনে বিশ্বাস করতে শুরু করে।
খবর নিয়ে জানা যায় রাঙ্গুনিয়ায় তার নিজ এলাকায় প্রতারণার টাকা দিয়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেছেন, বর্তমানে তিনি ডুবাতে একটি পতিতালয় পরিচালনা করছেন বলে জানা গেছে, সেখানে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যৌনকর্মীদের নিয়ে ব্যবসা করছেন বলে জানা যায় এই প্রতারক।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় ২০০৯ সালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাচনে আনারস পথিক নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হন এই প্রতারক সেই সময় মাত্র ৩ টি ভোট পেয়ে জামানত হারান তিনি, এরপর চলে যায় দুবাইয়ে সেখানে কোন কিছু না করলেও সবাইকে বলে তিনি একজন ব্যবসায়ী, এই প্রতারকের মূল কাজ বিভিন্ন দেশ থেকে মেয়েদের নিয়ে যৌনকর্মী হিসেবে বিক্রি করা।