হারতে হল ব্রাজিলকেও!ক্যামেরুনের কাছে বিশ্বকাপে অঘটনের ধাক্কা এড়াতে পারল না ব্রাজিলও। আর্জেন্টিনা, স্পেন, পর্তুগালের মতো গ্রুপে এক ম্যাচ হেরেই শেষ ষোলোয় তিতের দল। প্রচুর সুযোগ নষ্ট করে হার তিতে-বাহিনীর।
ব্রাজিল ০
ক্যামেরুন ১ (আবুবাকার)

বিশ্বকাপে অঘটনের ধারা অব্যাহত। এ বার গ্রুপের শেষ ম্যাচে হেরে গেল ব্রাজিল। আর্জেন্টিনা, স্পেন, পর্তুগালের মতো গ্রুপে একটি ম্যাচ হেরেই শেষ ষোলোয় যেতে হচ্ছে তাদের। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে শেষ ২৭ ম্যাচে অপরাজিত ছিল ব্রাজিল। শুক্রবার রাতে ভেঙে গেল সেই নজির। অতিরিক্ত সময়ে ভিনসেন্ট আবুবাকারের একমাত্র গোলে হার স্বীকার করতে হল সেলেকাওদের।
গোটা ম্যাচে প্রচুর সুযোগ পেয়েছিলেন তিতের ছেলেরা। কিন্তু একটাও কাজে লাগাতে পারেননি। গোলের সামনে থেকে অনেক শট বাইরে মেরেছেন। নেমার না থাকলেও ব্রাজিলের দলে গোল করার অনেকে রয়েছেন। সুযোগও তৈরি হয়েছে প্রচুর। কিন্তু জালে বল জড়াতে পারবেন এমন ফুটবলারকে অন্তত শুক্রবার খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাত মেলানোর দূরত্ব থেকেও গোল নষ্ট হয়েছে। একাই অন্তত দু’টি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন ব্রুনো গিমারায়েস।
প্রত্যাশামতোই ক্যামেরুন ম্যাচে ব্রাজিলের প্রথম একাদশ আমূল বদলে ফেলেছিলেন তিতে। ন’টি বদল করেছিলেন। আগের ম্যাচের থেকে শুধু এদের মিলিটাও এবং কাসেমিরোকে রেখেছিলেন। শুরু করেছিলেন আর্সেনালের দুই স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি এবং গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ছিলেন ম্যান ইউয়ের অ্যান্টনি। ব্রাজিলের হয়ে এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম বার নামেন দানি আলভেস। ব্রাজিলের হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে খেললেন এবং নেতৃত্ব দিলেন তিনি।
শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছিল ব্রাজিল। দ্বিতীয় মিনিটেই সুযোগ পায় তারা। অ্যান্টনি পাস দেন রদ্রিগোকে। তিনি পাস দেন ফ্রেডকে। কিন্তু ফ্রেড পৌঁছতে একটু দেরি করে ফেলায় বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি। ব্রাজিলের আক্রমণ সামলাতে শারীরিক ফুটবল খেলার রাস্তা নেয় ক্যামেরুন। সাত মিনিটেই প্রথম হলুদ কার্ড দেখে তারা। কিন্তু ব্রাজিলের আক্রমণ থামানো যায়নি। ১৪ মিনিটের মাথায় ফ্রেডের ক্রস থেকে দারুণ হেড করেছিলেন মার্তিনেল্লি। কিন্তু ক্যামেরুন গোলকিপার ইপাসি তা বাঁচিয়ে দেন। প্রথম ১৫ মিনিটে ব্রাজিলের বল পজেশন ছিল প্রায় ৭১ শতাংশ।
২০ মিনিটে প্রথম আক্রমণ দেখা যায় ক্যামেরুনের। টোলোর ক্রস এসেছিল ব্রাজিলের বক্সে। কিন্তু আবুবাকার পৌঁছনোর আগেই বল সেভ করে দেন এদেরসন। পাঁচ মিনিট পরে আবার সুযোগ পায় ব্রাজিল। মার্তিনেল্লির পাস থেকে থেকে জেসুসের শট আটকে যায় ডিফেন্ডার এবসের পায়ে লেগে। দুই উইং দিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছিল ব্রাজিল। মাঝমাঠেও ছিল তাদের শাসন। ক্যামেরুন যা-ই আক্রমণ করছিল, তা ছিল মূলত প্রতি আক্রমণ নির্ভর।
হারতে হল ব্রাজিলকেও!ক্যামেরুনের কাছে ৩৮ মিনিটে আবার অ্যান্টনির একটি শট বাঁচান এপাসি। বিরতির সামান্য আগে অল্পের জন্য এগোতে পারেনি ব্রাজিল। তিন জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে মার্তিনেল্লির শট অল্পের জন্য বাঁচিয়ে দেন এপাসি। তার পরেই গোল খেতে খেতে বেঁচে যায় ব্রাজিল। এমবিউমোর হেড বাঁচিয়ে দেন এদেরসন।
দ্বিতীয়ার্ধে পর পর দু’বার অল্পের জন্য গোল পায়নি ব্রাজিল। ৫৭ মিনিটে এদের মিলিটাওয়ের বাঁ পায়ের শট এপাসি ধরতে পারেননি। তা পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটেই দ্রুত ফ্রিকিক থেকে নেওয়া অ্যান্টনির শট দুর্দান্ত ভাবে বাঁচিয়ে দেন এপাসি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই খেলা হতে থাকে ক্যামেরুনের বক্সে। ক্যামেরুনকে টিকে থাকতে গেলে এই ম্যাচে জিততেই হত। কিন্তু ব্রাজিলের রক্ষণ ভাগ পেরোতেই পারছিল না তারা।