খাবার বিদ্যুৎ পানি সংকটে ফিলিস্তানের বাসিন্দারা দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাঁজা উপত্যকায় নৃশংস হামলা চালানোর পর থেকে সেখানে বিদ্যুৎ পানি এবং খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, স্থানীয় বেকারি গুলোতে দেখা দেয় রুটির সংকট এবং কয়েকটি বেকারীতে রুটি কিনার জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়াই পালিয়ে যাওয়া আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য মোবাইল ফোন চার্জ করতে পারছে না সেখানকার বাসিন্দারা তাদের আত্মীয়রা বেঁচে আছে কিনা ঘুষ নিয়ে জানার জন্য জেনারেটরের মাধ্যমে মোবাইল ফোন চার্জ দিচ্ছে।ইসরাইলি আগ্রাসন থেকে বাঁচতে হাজার হাজার বাসিন্দা উত্তর দিকে পালিয়ে যেতেও দেখা গেছে,খান ইউনিসের এক বাসিন্দ বলেন এই সংকট থেকে একমাত্র আল্লাহু ছাড়া আমাদের আর কেউ রক্ষা করতে পারবে না, তিনি আরো বলেন আমি কয়েকটি বেপারী ঘুরে মাত্র চারটি রুটি সংগ্রহ করতে পেরেছি।
শুক্রবার দখলদার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী গাজার উত্তরের বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার কথা বলেছিলেন কিন্তু হামাসের নেতারা এলাকা ছেড়ে যাবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।জাতিসংঘ ইসরায়েলকে “মানবিক বিপর্যয় এড়াতে” আহ্বান জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা কামী সংগঠন হামাসের গাজা থেকে হামলার প্রতিক্রিয়ায়, ইসরায়েল “সম্পূর্ণ অবরোধ” করে রেখেছে, খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে এবং গাজায় বিদ্যুত লাইন কেটে দিয়েছে।
ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলার পর থেকে সেখানকার দোকানগুলোতে নিত্য প্রয়োজনীয় পূর্ণ ফুরিয়ে আসছে।খান ইউনিসের আরেক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের শিশুদের অনাহারে রেখে ইসরায়েল আমাদের সাথে এভাবেই যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। তারা বোমা মেরে ক্ষুধার্ত শিশুদের হত্যা করেই চলেছে।”ইসরাইল বলছে তাদের জনগণকে তারা একটি নীরবতা স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছে এবং তারা নিরাপদে রয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে বলেছে। যারা পালিয়ে গেছে তারা বলে রাস্তা অনেক দুর্গম এবং রাস্তা প্রায়ই ব্যবহার করা কঠিন।গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ইসরায়েলের উত্তর থেকে পালিয়ে আসা গাড়ি ও ট্রাকে হামলায় ৭০ জন নিহত এবং ২০০ জন আহত হয়েছে। রয়টার্স স্বাধীনভাবে বিষয়টি যাচাই করতে পারেনি।
গত সপ্তাহে হামাসের হামলায় ১৩০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ১৯৪৮ সালের পরে থেকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে এবং ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে তাদের অনেক যুদ্ধাও বন্দী হয়েছেন। হামাসের হামলার পর থেকে শনিবার পর্যন্ত ইসরাইলের এই পর্যন্ত ২,২০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
খাবার বিদ্যুৎ পানি সংকটে ফিলিস্তানের বাসিন্দারা মিশরের সীমান্ত অতিক্রম করার বিকল্প ছাড়াই, গাজার বেশির ভাগ জনসংখ্যা আশ্রয়ের জন্য দক্ষিণে ভিড় করছে, কারণ ইসরায়েল সীমান্তে সৈন্য ও ট্যাঙ্ক তৈরি করছে। ইসরায়েল ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছে।আমাদের এখন গাজায় জ্বালানি ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষের নিরাপদ পানীয় জলের একমাত্র উপায় হল জ্বালানি। তা না হলে, মানুষ মারাত্মক ডিহাইড্রেশনে মারা যেতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার বলেছেন তিনি গাজার মানবিক সংকট মোকাবেলা করা কে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, ইসরায়েল, মিশর, জর্ডান, অন্যান্য আরব রাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের সাথে কাজ করছেন। ৭ অক্টোবরের হামলায় মার্কিন জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ও বলেছেন তিনি।
বোমা হামলায় এ পর্যন্ত ১০,০০০ মানুষ আহত হয়েছে বলে জানান গাজা কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রীর মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন হাসপাতালে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য।
হামাসের সরকারী মিডিয়া অফিস থেকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৭,০০০ আবাসন ইউনিট ছাড়াও ১৬,৯৫ টিরও বেশি ভবন এবং উঁচু টাওয়ার ধ্বংস হয়েছে।এদিকে জেনারেটর চালানোর জন্য কোন জ্বালানি না থাকায়, আদেল শাহীন দিনের আলোতে তার সোলার প্যানেল দিয়ে মানুষের ফোন চার্জ করছেন।মোবাইল চার্জ দিতে আসা এক ব্যক্তি বলেন আমরা এখানে বিদ্যুৎ পাচ্ছিনা তাই সূর্যের আলোতে চুলার প্যানেলের মাধ্যমে মোবাইল ফোন চার্জ করছি, আমাদের সূর্যের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।