
আরিফুল ইসলাম সুমন, নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ।।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। একজন মহীয়সী নারী ও তুখোর রাজনীতিবিদ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী হিসেবে রবিবার (০২ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা এ দিন আনন্দমূখর পরিবেশে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকা সরাইল উপজেলার অরুয়াইল এবং শাহবাজপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এসময় তিনি নানা শ্রেণীপেশার মানুষের কাছে তার আশা-আখাঙ্কার বিষয়টি কৌশলে তুলে ধরেন।
ভাষাসৈনিক ও প্রবীণ বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ প্রয়াত অলি আহাদের মেয়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বিশেষ করে বিগত ১৯৭৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে এই আসন থেকে তার পিতার পরাজয়ের বদলা নিতেই তিনি এখান থেকে এমপি নির্বাচন করতে চান এবং এতে সকলের ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।
‘দৈনিক যুবকন্ঠ” প্রতিনিধিকে এইসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই নির্বাচনী এলাকার অনেকে।
স্থানীয় লোকজন জানান, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা বিভিন্ন গণসংযোগে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার বাবা ছিলেন একজন ভাষা সৈনিক। তিনি ছিলেন এই অঞ্চলের জননন্দিত একজন নেতা। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে যখন আওয়ামী লীগের চারিদিকে গণজোয়ার। এর মাঝেও আমার বাবা (অলি আহাদ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী (গাভী মার্কা) হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৪২ হাজার ভোট পেয়ে তিনি অগ্রগামী ছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে তাহের উদ্দিন ঠাকুর (সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী) পেয়েছিলেন ৩৪ হাজার ভোট। কিন্তু তৎকালীন সময়ে ক্ষমতাসীনরা হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে ঢাকায় নিয়ে তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে বিজয়ী ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি নির্বাচনী মাঠে লোকজনদের আরো বলেন, বর্তমানে আমি এই আসনে বিএনপি দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চাই। এই আওয়ামী লীগ সেইসময়ে আমার বাবার সাথে চরম অন্যায় করেছে। এতো বছর পর এখন তারা আমার ও দলের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। এখন সময় এসেছে তাদের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার, এই নির্বাচনের মাধ্যমে।
রুমিন ফারহানা ভোটারদের বলেন, আমার বাবা এই এলাকার মানুষের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন। এখন আমিও আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে এই এলাকার উন্নয়ন সহ মানুষের সেবা করতে ইচ্ছুক। এতে আপনাদের সহযোগিতায় এবং আশা করি দলের প্রতি আমার ত্যাগ ও আমার ভূমিকা বিবেচনা করে দল এখানে আমাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রদান করবে। মনোনয়ন পেলে আসনটি উদ্ধার করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দেব।
এই বিষয়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা জানান, তিনি ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির মাঠে। তার বাবা যখন রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন, তার বাবার সাথে দেখা করতে সেখানে তিনি প্রায়ই যেতেন। তাই ছোটবেলায়ই রাজনীতি শিখেছেন তিনি। রুমিন ফারহানা আরো জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া তার পূর্বপুরুষের রাজনীতির জনপথ। এখানকার বিএনপির তৃণমূল ও জেলার নেতাদের সঙ্গে সকল সময়ই তার যোগাযোগ ছিল এবং এখনো আছে।
রুমিন ফারহানা দাবি করেন, তিনি এই নির্বাচনী মাঠের বাইরের কোনো নেতা নন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে ২৫টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। তিনি এসব মামলার হাজিরাও দিচ্ছেন, নির্বাচনী মাঠেও কাজ করছেন। এখন প্রতিদিনই এলাকার মানুষদের সঙ্গে তার কথা হচ্ছে। এই নির্বাচনী এলাকার মানুষ তাকে সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছেন। এখানকার মানুষ এখন পরিবর্তন চায় এবং তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। এখন সর্বক্ষেত্রেই নারীরা অবদান রাখছেন। তাই দলীয় চূড়ান্ত মনোনয়নের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী বলে রুমিন ফারহানা জানান।