বিগত বছরগুলোর মতো চলতি বছরেও রমজান মাসে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিগত বছরগুলোতে রমজানের প্রথম সপ্তাহে যত সংখ্যক মুসল্লি টেম্পল মাউন্টে (আল-আকসা) আসতেন, এ বছরও তাতে কোনো ব্যতিক্রম হবে না। তবে প্রতি সপ্তাহে জেরুজালেম ও টেম্পল মাউন্ট এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। তার ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
প্রতি বছর রমজান মাসে হাজার হাজার মুসলিম আল-আকসায় নামাজ আদায় করেন। গত বছর অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ফলে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের মাঝে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিকে মুসলিমদের আল-আকসায় নামাজ পড়তে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক বিবৃতিতে বলেন, পশ্চিম তীরে উত্তেজনা বাড়ানোটা ইসরায়েলের নিজের নিরাপত্তার জন্যই ক্ষতিকর।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভ‚তপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৯৮০ জন ফিলিস্তিনি। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রচেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবিক বিরতি ঘোষিত হয়েছিল গাজায়। সে সময় ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তার পরিবর্তে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েলও।
হিসেব অনুযায়ী, এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছেন হামাসের কব্জায়। তাদের ছাড়িয়ে আনতে গাজায় রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই দ্বিতীয় দফায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি হওয়ার কথা রয়েছে।