![](https://ajanabangladesh.com/wp-content/uploads/2022/03/life2.gif)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তিন সাংবাদিকের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় ঘটনায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্বববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ঢাবিসাস)। রোববার সমিতির সভাপতি আসিফ ত্বাসীন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন এক যুক্ত বিবৃতিতে এই দাবি জানান।বিবৃতিতে ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্যথায় সারাদেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত শনিবার সন্ধ্যায় বুয়েটের শের-এ-বাংলা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে সংবাদ সংগ্রহে যান দৈনিক কালের কন্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান, দৈনিক জনকণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার মুনতাসির জিহাদ ও ঢাবিতে কর্মরত সাংবাদিক কবিরুল ইসলাম ও । এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাছে শিক্ষার্থী অপহরণের খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মারধর করেন। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, পত্রিকার পরিচয়পত্র ও মানি ব্যাগ নিয়ে যান। সেখান থেকে তাদের নেওয়া হয় হলের ক্রিড়া কক্ষে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে কক্ষটিতে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এর আগে ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবুল বাশারের ওপর হামলা চালায়। ১ ডিসেম্বর পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলী ইউনুস হৃদয়ের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। ১৬ নভেম্বর সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ও এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় দৈনিক যুগান্তরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাব্বি হাসান সবুজের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর এ ধরনের হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত এক মাসে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। অথচ একটি ঘটনাতেও ছাত্রলীগ জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অনেকক্ষেত্রে দায়সারা দুঃখ প্রকাশ করেই তারা ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি প্রদান থেকে বিরত থেকেছে। এ সকল ন্যাক্কারজনক ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ। অপরাধীদের বিষয়ে ছাত্রলীগ প্রশাসনের এমন অবস্থান অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত।
নেতৃবৃন্দ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে বুয়েটের ঘটনায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, ছাত্রলীগকে অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল না করে হামলাকারীদের বিচারে কার্যকর ভূমিকা রাখুন।