ছাতক (সুনামগঞ্জ )প্রতিনিধি:: সুরমার নদী ভাঙনে ছাতকের মুক্তিরগাঁও-পীরপুর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।গত সোমবার রাতে সুরমা নদীতে পাকা সড়কটি ভেঙ্গে পড়ায় ৮টি গ্রামবাসি অর্ধলক্ষাধিক মানুষ চরম দুভোগে শিকার হচ্ছে সুরমা নদী ভাঙন এখন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে।
উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও এলাকায় নদী ভাঙন এখন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। ভাঙনের কারনে একাধিকবার যানবাহন চলাচল বন্ধ হলে ও এলাকাবাসীর অনুদান ও স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন এলাকায় গাছ-বাঁশ ও বালির বস্তা ফেলে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু দু’সপ্তাহ ব্যবধানে ভাঙনে সড়কের বেশ কিছু পাকা অংশ ও একটি কালভার্ট গিলে নিয়েছে রাক্ষসী সুরমা নদী।
ফলে এলাকার ৫০ হাজার জনসাধারন পায়ে হেটে চলাচলেও চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। স্থানীয় ৮টি গ্রামবাসী ভাঙন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।
গত ১৬ বছর পূর্বে এই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে ছাতক উপজেলা সদর থেকে কালারুকা ইউনিয়নের পীরপুর পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের (এলজিইডি) অধীনে সাড়ে ৮কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। সড়কের রাস্তা পাকা হওয়ার পর থেকে মুক্তিরগাঁও, হরিষপুর, মিরাপাড়া, শিমুলতলা, নানশ্রী, মৃর্তগাঁও, গৌরিপুর ও পীরপুর ও সিলেটের কোম্পনীগঞ্জ উপজেলার শিবপুর, গোফরাপুর ও দূর্গাপুর এলাকার প্রায় ৫০হাজার জনসাধারন টেম্পু, লেগুনা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা দিয়ে যাতায়াত করতেন। কিন্তু গত সোমবার নদী ভাঙনে সড়কের বেশ কিছু অংশ বিলিন হওয়ায় এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় একবছর পূর্বে পানি সম্পদ মন্ত্রীর নির্দেশে নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। নদী ভাঙন রোধে জরিপ কাজও করা হয়। কিন্তু এরপর আর কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি।
গত সোমবার ভাঙন কবলিত এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, পাকা সড়কে ২টি অংশ দেবে গেছে। আরও ২টি পাকা নীচের অংশের মাটি সরে যাচ্ছে। যে কোন মুহুর্তে এই ২টি পাকা বিলিন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভাঙনের পাশ দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের লোকজন আতংক নিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করছেন।
গত তিন বছরে ভাঙ্গনে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৩শতাধিক বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। আরো নদী ভাঙ্গনের আশংকায় অজানা আতংকে রয়েছেন অসংখ্য পরিবার। নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে প্রায় ২শ’৫০ফুট দূরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গনের প্রভাবে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম হুমকির মূখে পড়েছে কয়েকটি শিক্ষা-প্রতিষ্টানসহ পার্শ্ববর্তী অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর। ভাঙ্গন রক্ষায় স্থানীয় লোকজন ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজেদের উদ্যোগে বেশ কয়েক লাখ টাকা চাঁদা সংগ্রহ করে বাঁশেঁর বেড়া ও বালির বস্তা ফেলেও কোন লাভ হয়নি। রাস্তার এক তৃতীয়াংশ এরই মধ্যে গিলে নিয়েছে সুরমা নদী।
স্থানীয় সাবেক মেম্বার নুরুল হক, মহিলাসদস্য ফুলেছা বেগম ও আরিফুজ্জামান জানান, নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে সড়কটি রক্ষায় এলাকাবাসী বিভিন্ন গ্রাম থেকে একাধিকবার কয়েক লাখ টাকা চাঁদা তুলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করেও সড়কটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময়ে সরকারী ভাবে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা কবে হবে, এর কোন সঠিক জবাব কেউ দিতে পারেনি।