
আরিফুল ইসলাম সুমন, স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
আল আমীন। বয়স দশ বছর। বাবা ইউসুফ মিয়া ঢাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। আল আমীন ও তার মা এবং চার বছর ও এক বছর বয়সী দুই বোন তারা সকলেই ঢাকায় বাবার সাথেই থাকতো। তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার কৃষ্ণপুর বটতলা গ্রামে।
রবিবার (১৩ জানুয়ারী) আল আমীন সহ পরিবারের সকলেই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিল। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে এসে তারা বাসের সুপারভাইজারকে জানালো কুমিল্লা বিশ্বরোড মোড় যাবে। সুচতুর বাস সুপারভাইজার কৌশলে তাদের বাসে তুলে এনে দুপুরের দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে নামিয়ে দেয়।
রবিবার দুপুর দুই’টার দিকে বাস থেকে তারা সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে নেমে চারিদিক অচেনা দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আল আমীন ও তার চার বছর বয়সী ছোট বোন বাবা ইউসুফ মিয়ার হাত ধরে এবং এক বছর
বয়সী ছোট বোন তার মায়ের কোলে চড়ে তারা সকলেই বেগতিক অবস্থায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরের দিকে হেঁটে রওয়ানা দেয়।
পথিমধ্যে সদর উপজেলার নন্দনপুর বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় তারা পৌঁছলে সড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা রড বোঝাই সেলু মেশিনের ইঞ্জিন দ্বারা চালিত একটি “হ্যান্ড ট্রলি” আল আমীনকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। চোখের পলকে বাবা, মা ও ছোট দুই বোনের সামনে সড়কে লাশ হয়ে পড়ে থাকে আল আমীন।
আল আমীনের পিতা ইউসুফ মিয়া সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ দিন পর গ্রামের বাড়িতে ফিরবে আল আমীন এই আনন্দে শনিবার রাতে ভালো করে ঘুমাইনি সে, কখন সকাল হবে। ছোট বোনকেও ঘুমোতে দেয়নি। বাড়িতে যাবে আনন্দ করবে, আরো কতোকিছু। আল আমীন বাড়ি ফিরছে, তবে লাশ হয়ে।
সরাইল বিশ্বরোড মোড় খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হোসেন সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, শিশুটির লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘাতক হ্যান্ড ট্রলি আটক হয়েছে। ড্রাইভার পলাতক রয়েছে।