
মোছলেম উদ্দীন ইমন॥
একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি হিসেবে আলোচনায় উঠে আসছে তিন আলোচিত ও জনপ্রিয় নারী নেত্রীর নাম। তারা হলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা মান্নান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সরকারের শিল্প ও প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরীর মেয়ে নাসরিন ইসলাম চৌধুরীর নামটি পটিয়াসহ চট্টগ্রামের রাজনীতির মাঠে খুব আলোচিত হচ্ছে।
তিন নারী নেত্রীর কারো শ্বশুর বাড়ি কারো বাপের বাড়ি পটিয়ায় হওয়ায় পুরো চট্টগ্রামের আওয়ামী রাজনীতিতে এই তিন নারী নেত্রীর যথেষ্ঠ পরিচিত ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। সংরক্ষিত মহিলা এমপি হিসেবে যাবতীয় গুনাবলী সম্পন্নও। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ও উত্তর জেলা, মহানগরের নারীদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে অসাধারণ তাদের পারিবারিক ও ব্যক্তিগত অবদান রয়েছে। জানা গেছে, হাসিনা মান্নান গত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
তাঁর স্বামী মরহুম আবদুল মান্নান চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর সংসদ সদস্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, হাসিনা মান্নান একজন মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া হাসিনা মান্নান চট্টগ্রাম জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্বে রয়েছেন। হাসিনা মান্নানের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার নারী কাজ করে যাচ্ছেন, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য হিসেবেও হাসিনা মান্নানের নামটি আলোচনায় রয়েছে। চেমন আরা তৈয়ব, চট্টগ্রামের মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয় পরিচিত এক নারী নেত্রী। তিনি জীবনে অধিকাংশ সময় কাটিয়েছে রাজনীতির পেছনে।
বর্তমান তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্বে রয়েছেন।তিনি গত নবম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ছিলেন। দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভায় মহিলা আওয়ামী লীগের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।
একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে থাকলেও বর্তমান এমপি সামশুল হক চৌধুরীকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন করেনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘুরে ফিরে চলে আসছে চেমন আরা তৈয়বের নামটি, তারা স্বামী চট্টগ্রাম জেলার সাবেক সীভিল সার্জন ডা. আবু তৈয়ব। নাসরিন ইসলাম চৌধুরী, তিনি জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর সরকারের শিল্প ও প্রতিরক্ষ প্রতিমন্ত্রী, বাংলাদেশের অন্যতম সংবিধান প্রনেতা অধ্যাপক নুরুর ইসলাম চৌধুরীর সুযোগ্য মেয়ে নাসরিন ইসলাম চৌধুরী।
নাসরিন ইসলাম চৌধুরী বর্তমান রাজধানীর একটি স্কুলের শিক্ষাকতা পেশায় যুক্ত রয়েছেন। নাসরিন ইসলাম চৌধুরী বাল্যকালে জাতির জনকের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের সহপাঠি। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথেও যুক্ত ছিলেন। কিন্তু অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরীর পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে অনাদর অবহেলার শিকার হতে হয়েছে। অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুব ঘনিষ্ঠসহচর ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।
অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুর পর কেউ তাদের পরিবারের খোঁজ খবর রাখেনি এবার চট্টগ্রামের তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা ধারণা করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রতি সম্মান জানিযে উনার মেয়ে নাসরিন ইসলামকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য মনোনিত করবেন।
পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগ নেতা ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, নুরুল ইসলাম চৌধুরীর পরিবারকে বিগত সময়ে কোন ধরণের মূল্যায়ন করা হয়নি, আশা করি এবার মামনীয় প্রধানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম চৌধুরীর সুযোগ্য মেয়েকে সংরক্ষিত আসনে এমপি মনোনিত করে নুরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রতি সম্মান দেখাবেন এটা পটিয়াবাসী কামনা করেন।
সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরীর মেয়ে নাসরিন ইসলাম চৌধুরী নিজের নাম বিভিন্নভাবে আলোচনায় আসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার আব্বা জাতির জনকের খুব বিশ্বস্থ ছিলেন উনি মারা যাওয়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমাদের পারিবারিক যোগাযোগ একটু কমে গেছে। আমার আব্বার মৃত্যুর সংবাদ শুনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাসায় দেখতে এসেছিলেন। আমার আব্বু জীবিত থাকাকালিন একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর আমাদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে এবংবাসায় এসেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী আমাদেও সর্ম্পকে সব কিছু জানে এবং অগত আছেন প্রধানমন্ত্রী চাইলে সংরক্ষিত আসনে আমাকে মনোনিত করতে পারেন। এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব বলেন, আমাকে যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটা আমি পালন করার চেষ্টা করেছি। চট্টগ্রামের নারী সমাজকে সংগঠিত করেছি, আমার কাজের মূল্যায়নের অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য মনোনীত করেছিলেন। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলে আমাকে সংসদ সদস্য মনোনীত করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী যাকে যোগ্য মনে করে তাকে মনোনীত করবেন, এবং বিগত দিনের সাংগঠনিক কর্মকান্ড পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন।
সংরক্ষিত আসনের এমপি পদ প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাসিনা মান্নান বলেন, আমার স্বামীও এমপি ছিলেন, এদেশের মানুষের জন্য অনেক ত্যাগ করেছেন। আমি আমার সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছি। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এক সময়ে কোন মেয়ে ছিল না, আমরা মেয়ে বউ জিদের ঘর থেকে ডেকে এনে মহিলা আওয়ামী লীগ সৃষ্ঠি করেছি এর প্রতিদান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছিলেন।
এবারও যদি প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রয়োজন মনে করেন আমি সংসদ সদস্য হব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি মানুষের এবং নেতা কর্মীদের সবার ভাল মন্দর খবরা খবর রাখেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যাকে ভাল মনে করবেন তাকে সংরক্ষিত আসনের জন্য মনোনীত করবেন। এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব রাশেদ মনোয়ার বলেন, যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা সবাই যোগ্য এবং আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত ব্যক্তি তাদের পরিবারের উপর ভর করে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন এলাকায় সংগঠিত হয়েছে,
তারা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামবাসী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন।