
নিজস্ব প্রতিবেদক
নুসরাত জাহান রাখি হত্যার অন্যতম আসামি ফেনী সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বহীন আচরণের জন্য ব্যারিস্টার সুমনের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ওসি সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি ও ফেনীর সোনাগাজী মাদারাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান গ্রাফি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বহীন আচরণের জন্য দোষী সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।রোববার রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অসীম মজার জনের
বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তিনি পলাতক ছিলেন ব্যারিস্টার সুমন হাইকোর্টে আপিল করার পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় এরপর প্রায় ২০ দিন পার হওয়ার পর বহু আলোচনা-সমালোচনার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা ওসি মোয়াজ্জেমের গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে শাহবাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আইন অনুযায়ী তার ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে নুসরাত জাহান রাফি হত্যার এই আলোচিত মামলার অন্যতম আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনের গ্রেফতারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ব্যারিস্টার সুমন। সাথে সাথে তিনি ধন্যবাদ
জানিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ প্রশাসনকে। তিনি মোয়াজ্জেম হোসেনের গ্রেফতারের বিষয়ে আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন দেশেই আছেন। তার দেশত্যাগের সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে তিনি গ্রেফতার হবেন।প্রসঙ্গত : মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সমাজের বিভিন্ন অসংগতি নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করে আলোচিত আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছিলেন।গত ১৫ এপ্রিল সাইবার আদালতে এ আবেদন করেছিলেন তিনি। পরবর্তিতে পিবিআই তদন্তে ওসি মোয়াজ্জেমকে দোষী সাব্যস্থ করার পর ব্যারিস্টার সুমন বলেছিলেন, মোয়াজ্জেমের নৈতিক অধিকার নেই পুলিশ ডিপার্টমেন্টে থাকার।
আদালতে করা রিট আবেদনে বলা হয়েছিলো, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর পর মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে।২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষ শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।ভিডিওতে দেখা যায়, থানার ওসির সামনে অঝোরে কাঁদছিলেন নুসরাতজাহান রাফি। আর সেই কান্নার ভিডিও করছিলেন সোনাগাজী থানার ওসি। নুসরাত তার মুখ
দু’হাতে ঢেকে রেখেছিলেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।’ গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করেছিল পুলিশ।ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছে। এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে নুসরাত জাহান রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল
মাদরাসায় গেলে। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা ৪-৫ জন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত জাহান রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বেশ কয়েক জন আসামী গ্রেফতার হলেও সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ছিল এই মামলার অন্যতম আসামি পরে ১৬ ই জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়