লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে সব পুলিশ যে একই রকম নয় তা এই মোহাম্মদ জহির উদ্দিন প্রমাণ করে দিয়েছেন উল্লেখ্য লক্ষীপুরের প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার ও কর্মসংস্থানসহ অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জবাসীর কাছে জনপ্রিয় নাম মোহাম্মদ জহির উদ্দিন। তিনি রামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে দায়িত্বরত। ভিন্নধর্মী প্রচেষ্টা ও অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি আজ রামগঞ্জবাসীর কাছে ‘মানবিক পুলিশ’ হিসেবে পরিচিত।জহির সোমবার (১ জুলাই) বদলির আদেশের চিঠি হাতে পেয়েছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ব্যক্তিগত আইডিতে
তিনি একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে লেখা হয়েছে ‘হঠাৎ বদলির আদেশ প্রাপ্ত হইলাম, খুব মিস করব রামগঞ্জের মাটি ও মানুষকে’।এদিকে তাঁর এ ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর থেকে রামগঞ্জবাসীর ফেসবুকে একটিই দাবি দেখা যায়, ‘এসআই জহিরের বদলির আদেশ প্রত্যাহার চাই’। লক্ষ্মীপুর ১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার খান, জেলা পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন ও রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেনের কাছে তাদের এ দাবি। এরই মধ্যে বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এসআই জহিরের স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে মো. ফরহাদ
লিখেছেন, আপনার থেকেও রামগঞ্জের মানুষ আপনাকে বেশি মিস করবে। আপনি যা করেছেন তাদের জন্য, সারা জীবনেও তারা ভুলতে পারবে না। নাঈম ভূঁইয়া লিখেছেন, ভাই-ব্রাদারগুলো থুইয়া থাকতে পারবেন অন্য কোথাও? তবে এসআই জহিরকে এসব মন্তব্যের উত্তর দিতে দেখা যায়নি। জানা গেছে, জহির উদ্দিন ২০১৬ সালের ১ মে রামগঞ্জ থানায় যোগদান করেন। এরপর থেকে অসহায় মানুষদের সুখ-দুঃখে কাজ করে যাচ্ছেন। সোমবার (১ জুলাই) তিনি রাঙামাটি জেলাতে বদলির আদেশের চিঠি পেয়েছেন। তিনি নোয়াখালী জেলার কবিরহাট থানার বাসিন্দা। খোঁজ
নিয়ে জানা গেছে, জহিরের উদ্যোগে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের সোন্দরা গ্রামে প্রতিবন্ধী সাগর বাদশাকে একটি দোকানঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। ১৬ জুন চন্ডীপুর ইউনিয়নের একই পরিবারের জসিম, রাসেল, মোতালেব ও সজিব নামে চার প্রতিবন্ধীর জন্য একটি ভ্যারাইটিজ স্টোর তুলে দেন। চারজনকেই হুইল চেয়ার কিনে দিয়েছেন অবাধ চলাফেরা করার জন্য। জহির নিজে উদ্যোগ নিয়ে সমাজের বিত্তবান ও দানশীলদের সহযোগিতায় এসব মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন।রামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ জহির উদ্দিন
বলেন, চাকরির পাশাপাশি মানুষের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করছি। রামগঞ্জে কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সেগুলো সম্পন্ন করার পর বদলি হলে ভালো হতো। উপজেলার নয়নপুর গ্রামে একজন প্রতিবন্ধীকে একটি ঘর করে দিয়েছি, তা হস্তান্তর করতে হবে। এ ছাড়া সমেষপুর গ্রামে এক অসহায় ব্যক্তির পুড়ে যাওয়া বসতঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। কাজটি এখনো শুরু করতে পারিনি।তাই কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারলে আমার বদলি যেখানে হোক কোন সমস্যা নেই বিশেষ করে এলাকার মানুষ আমাকে অনেক ভালোবাসেন আমিও তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি