ছাতক প্রতিনিধি:
১৭ বয়সী তারেক নিখোঁজ হওয়ার দশ দিন পরে মাথার খুলিসহ তার উদ্ধার করেছে পুলিশ সুনামগঞ্জের ছাতকে নিখোঁজের ১০দিন পর তারেক আহমদ (১৭) নামের এক কিশোরের মাথার খুলিসহ টুকরো টুকরো কঙ্কাল উদ্ধার করেছে ছাতক থানা পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের সুহিতপুর গ্রাম সংলগ্ন হাওরের জমির সীমানা (আইল) থেকে ওই কিশোরের টুকরো টুকরো কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। সে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ডিগারকান্দি গ্রামের মুজিবুর রহমানের পুত্র বলে তিনি নিজেই শনাক্ত করেন।
সে সুহিতপুরস্থ ছালাম এন্ড ব্রাদার্সে ক্লিনার হিসেবে কাজ করে আসছিল। নিখোঁজের পরদিন (২৮ জুলাই) তারেকের পিতা ছাতক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন (নং-১২৫৯) এ ঘটনার খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরকত উল্যাহ খান, এএসপি সার্কেল বিল্লাল মিয়া, ছাতক থানার ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, তারেক আহমদ দীর্ঘ পাঁচ মাস থেকে গোবিন্দগঞ্জস্থ সুহিতপুরস্থ ছালাম এন্ড ব্রাদার্সের মালিক, ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের বানারশিপুর গ্রামের মবশ্বির আলীর পুত্র জামাল
উদ্দিনের বাসায় ক্লিনার হিসেবে কাজ করে আসছিল। ২৭ জুলাই সকালে ওই বাসা থেকে মালিকের অন্য বাসায় প্রতিদিনের ন্যায় নাস্তা করতে না যাওয়ায় দুপুরে বাসার মালিক তার শয়ন কক্ষে যান এবং সে কক্ষটি তালাবদ্ধ দেখেন। এক পর্যায়ে তালা খুলে কক্ষে প্রবেশ করে তারেককে পাওয়া না গেলেও তার ব্যবহৃত মোবাইলটি পাওয়া যায়। এর পর থেকে তারেক নিখোঁজ রয়েছিল। এদিকে তারেক নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার পরিবারের লোকজন চারদিকে খোঁজতে থাকে। সোমবার বিকেলে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুজির পর সুহিতপুর গ্রাম সংলগ্ন হাওর
এলাকায় খোঁজার এক পর্যায়ে কুকুরের অাসা যাওয়া লক্ষ করে এগিয়ে গেলে একটি জমির সীমানা (আইলে) মাথার খুলিসহ টুকরো টুকরো মানুষের কঙ্কাল দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে রাত প্রায় সাড়ে ৮টায় সুহিতপুর গ্রামে যান সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরকত উল্যাহ খানসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। এসময় পুলিশ সুপার উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্যে বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এক পর্যায়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ছাতক থানার এসআই সৈয়দ আবদুল
মন্নানের নেতৃত্বে জমির সীমানা (আইলে) থাকা মাথার খুলিসহ মানবদেহের টুকরো টুকরো কঙ্কাল ও তার পড়নের থ্রি-কোয়াটার টাউজার ও ট্রি-শাট উদ্ধার করেন। থ্রি-কোয়াটার টাউজার ও ট্রি-শাট দেখে তার ছেলে বলে শনাক্ত করেন মুজিবুর রহমান। বাসার মালিক জামাল উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ছেলেটি তার বাসায় কাজ করতো। কিভাবে নিখোঁজ হয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছেলেটি যে বাসায় কাজ করতো সে বাসায় সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও দেখলে বুঝা যাবে বিভাবে
নিখোঁজ হয়। অন্যান্য প্রশ্ন করার আগেই তিনি ৫মিনিট পরে কল ঘুরাচ্ছেন বলে লাইন কেটে দিলে আর তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে ছেলের মাথার খুলিসহ টুকরো টুকরো উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল দেখে বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন পিতা। তিনি তার ছেলে হত্যাকারিদের দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি আরো বলেন আমি গরিব মানুষ আমার ছেলে ওখানে কাজ করতো কিভাবে কে বা কাহারা আমার ছেলেকে এভাবে হত্যা করেছে আমি জানিনা তবে পুলিশের কাছে আমার অনুরোধ আমার ছেলের যারা খুন করেছে তাদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই