নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজ মাঝআকাশে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা টানটান উত্তেজনার পর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন ‘পিস্তলধারী’ এক যুবক। যুবকের নাম পলাশ আহমেদ বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে কমান্ডো অভিযানে নিহত পলাশ আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী চিত্রনায়িকা সামসুর নাহার সিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।সিমলাকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের
কাউন্টার টেররিজম ইউনিট কার্যালয়ে এলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নে সিমলা বলেন, পলাশ কেন বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করতে ছেয়েছে, তা তিনি বলতে পারবেন না।“আমাদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল। বিয়ের পর মনে হয়েছিল ওর মানসিক সমস্যা আছে। তাই তিক্ত হয়ে ডিভোর্স দিই।”চিত্রনায়িকা সিমলা আরো বলেন তিনি আমার কয়েকটি ছবির পরিচালক, হিসেবে ছিলেন আমি তাকে পরিচালক। হিসেবে চিনতাম সেখান থেকে আমাদের। পরিচয় হয় তার
ব্যক্তিগত ব্যবসা কি কাজ ছিল তা আমি জানতাম না পড়ে সে আমাকে বিয়ে করে তাদের বাড়িতেও নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু যখন আমি জানতে পারলাম তার মানসিক সমস্যা আছে তাই আমি তাকে ডিভোর্স দিয়ে দিলাম এই। বলে চিত্রনায়িকা সিমলা উপস্থিত সাংবাদিকদের জবাব দিলেন।কমান্ডো অভিযানের, পরে আঙুলের ছাপ মিলিয়ে জানা যায়, ওই যুবক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের দুধঘাটা এলাকার পিয়ার জাহান সরদারের ছেলে পলাশ আহমেদ। তার দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী সামসুর নাহার সিমলা। ওই ঘটনার মাস তিনেক আগে তাদের
বিচ্ছেদে হয়েছিল।ঘটনার দিন অভিযান পরিচালনাকারীরা জানিয়েছিলেন, পিস্তলধারী যুবক (পলাশ) ‘স্ত্রীর বিষয়ে’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।অবশ্য পরে সিআইডির ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায়, পলাশের হাতে থাকা সেদিনের পিস্তলটি ছিল দেশে তৈরি প্লাস্টিকের খেলনা।পিস্তল ওই ঘটনায় পলাশসহ কয়েকজনকে আসামি করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায় ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৩ ও ৬ (১) ধারা এবং বিমান-নিরাপত্তা বিরোধী অপরাধ দমন আইনের ১১ (২) ও ১৩ (২) ধারায় দায়ের করা
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে।মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে গত ২৪ মার্চ কাউন্টার টেরোরিজমের একটি দল পলাশের বাবা পিয়ার জাহান, মা রেনু বেগম, চাচা দ্বীন ইসলামসহ আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ভারতে অবস্থানরত সিমলাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সেদিনই জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।আজ ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সেই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া অজানা বাংলাদেশকে বলেন, “সিমলা গত ২৫ অগাস্ট দেশে ফিরেছেন। এরপর তার সাথে যোগাযোগ করা হয়। তদন্তের অংশ হিসেবে আজ বিভিন্ন বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।”মামলা তদন্তের জন্য চিত্রনায়িকা সিমলা কে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।