চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদের গোসাইলডাঙা এলাকায় সংখ্যালঘু এক পরিবারের প্রায় ৪৬ শতক ভিটেমাটি দখলে নেওয়র অভিযোগ ওঠেছে শিল্পগ্রুপ কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (কেএসআরএম) বিরুদ্ধে। আরএস ও পিএস খতিয়ান অনুযায়ী কুমুদরঞ্জন শীল এসব সম্পত্তির মালিক হলেও জবরদখল করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করছে প্রতিষ্ঠানটি। লিখিতভাবে সম্পত্তির মালিকানা নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দেওয়ার অভিযোগও করেছে কুমুদরঞ্জনের পরিবার। পৈতৃক সম্পত্তি উদ্ধারে প্রশাসন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন কুমুদরঞ্জনের বড় মেয়ে ডলি রানী শীল। কেএসআরএম কর্তৃক পৈতৃক ভিটেমাটি জবরদখল, হুমকি-ধমকির প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্যে ডলি রানী বলেন, গোসাইল ডাঙায় আমাদের পুরনো বাড়ির ওঠানে কেএসআরএম মালিক কবির আহমদ অস্থায়ীভাবে মালামাল রাখতো। বাড়ির সামনে পুকুরে পড়ে আমার ভাই মারা গেলে বাবা চিকনদ-ীতে চলে আসেন। এরপর তারা জায়গাটি দখলে নেয়। প্রতিবাদ করলেও তাদের কালো টাকা
আর সন্ত্রাসের কাছে আমরা দাঁড়াতে পারিনি। এখনো আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের পৈতৃক ভিটা ফিরে পেতে সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
তিনি জানান, গোসাইলডাঙ্গা মৌজার আরএস এবং পিএস দাগ অনুযায়ী চন্ডীচরণ শীলের দুই ছেলে প্রসন্ন কুমার শীল ও ফেজারাম শীল তাদের পূর্ব পুরুষ। প্রসন্ন কুমার শীলের দুই ছেলে কালী কুমার শীল ও মহেন্দ্র কুমার শীল। কালিকুমারের একমাত্র ছেলে কুমুদরঞ্জন শীল (ডলি রানী শীলের বাবা) এক কানি ২ গ-া তিন করা (প্রায় ৪৬ শতক) সম্পত্তির মালিক হন। নগরীর বারিক
বিল্ডিং মোড়ে সেই জায়গায় এখন কেএসআরএম গ্রুপের অফিস। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি অর্পিত সম্পত্তি আইন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের জায়গা ফেরতের ব্যবস্থা করেছেন। অথচ আমরা বাবার পৈতৃক ভিটেমাটিতে যেতে পারছি না। কালো টাকা এবং পেশি শক্তির কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। চট্টগ্রাম নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদের গোসাইল ডাঙায় আমার বাবার প্রায় ২৩ গন্ডা জমি (আমাদের পুরনো বসতবাড়ি) দখলে রেখেছে। আমরা এই অন্যায়ের বিচার
চাই। স্বাধীন দেশে একজন স্বাধীনতা বিরোধী এভাবে দাপট দেখিয়ে কিভাবে একটি সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলে রাখে বুঝতে পারি না। প্রশাসনের কাছে আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান আশা করছি। ডলি রানী অভিযোগ করে বলেন, কেএসআরএম গ্রুপের লোকজন আমার বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় বর্তমান গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় জোর করে স্বাক্ষর নিতে চেয়েছে। কিন্তু তারা পারেনি। বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়েছে। এখনো হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাই আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি উদ্ধারে প্রশাসন এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে রাহুল, রিক্ত, রাসেল, নেপাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।