নিউজ ডেস্ক:
আজ বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ১১ টা ৩০ মিনিট থেকে, রাষ্ট্রপক্ষের সহ্ মোট দুই পক্ষের ৩০ জন আইনজীবী খালেদা জিয়ার। জামিন শুনানির জন্য নিয়োগ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় টানটান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে, কবে তাদের প্রিয় নেত্রী জামিনে মুক্তি হয়ে তাদের মাঝে ফিরে আসবেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে দুই পক্ষের ৩০ জন করে আইনজীবীকে আদালত কক্ষে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মামলায় জামিন হলেই তার মুক্তির পথ খুলবে বলে তার আইনজীবীরা আশা করছেন।গত ৫ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চে এই আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রতিবেদন দিতে
না পারায় এজলাসে তুমুল হট্টগোলের মধ্যে তাদের আরও ছয় দিন সময় দিয়ে ১২ ডিসেম্বর আদেশ দেওয়ার দিন ঠিক করে আদালত।সেদিনের হট্টগোলের পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির আদালত কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা।আদালতের ফটকে প্রবেশের সময় সবার পরিচয়পত্র দেখা হচ্ছে। আপিল বিভাগে আদালত কক্ষের বাইরে আর্চওয়ে বসানোর পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী সারিবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়ে আছেন। আপিল বিভাগের তালিকাভুক্ত না হলে আইনজীবীদের কাউকে আদালত কক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেখানে নিরাপত্তায় থাকায় কর্মীরা সবার কার্ড দেখে তারপর ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন।সকাল ৯টায় আদালত বসার পর খালেদা জিয়ার
আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন দাঁড়িয়ে আদালতকে বলেন, “আপনারা আমাদের শেষ ভরসাস্থল। বাইরে আমার শত শত আইনজীবী দাঁড়িয়ে আছে, কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। অথচ ডিএজি, এএজি প্রায় সব ঢুকে বসে আছেন।”প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “আপিল বিভাগে এনরোলমেন্ট ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আমি একা এই সিদ্ধান্ত নিই নাই, সবাই মিলে নিয়েছি।”খন্দকার মাহবুব তখন বলেন, “আমি সে কথা বলছি না। ডিএজি, এএজি সবাই ঢুকেছে। এই ডিসক্রিমিনেশন কইরেন না। আমার জুনিয়রকে পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি একজন বয়স্ক মানুষ। বুড়ো বয়সে আমাকে ফাইল নিয়ে আসতে হয়েছে।”প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “আপনার জুনিয়র অবশ্যই ঢুকবে।”খন্দকার মাহবুব বলেন, “ঢুকতে দিচ্ছে না তো। আমরা আশ্বস্ত
করছি কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না। যারা সিনিয়র আছি বিষয়টা দেখব।”গত সপ্তাহের শুনানির কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “আপনরা তো করেননি, দেখেননি।”খালেদার আইনজীবী বলেন, “শত শত পুলিশ রাইফেল নিয়ে দাঁড়ায়ে আছে। আর আমার শত শত আইনজীবীও দাঁড়িয়ে আছে। এতে বিশৃঙ্খলা হতে পারে।”তখন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দাঁড়িয়ে বলেন, “উনাদের কতজন লাগবে বলে দেন। উভয়পক্ষের ২০ জন অথবা ৩০ জন করে থাকতে পারে।”বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক আইনজীবী জয়নুল আবেদীন তখন বলেন, যারা আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত, তাদের মধ্যে থেকে ৩০ জন করে থাকতে পারে।অ্যাটর্নি জেনারেল তখন প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে বলেন, “রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলেন ৩০টা করে স্লিপ দিতে।
আমরা সবাই বের হয়ে যাব। স্লিপ নিয়ে পরে ঢুকব।”প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার শুনানি শুরুর আগে ৫ মিনিট সময় দেওয়া হবে। তখন সবাই বেরিয়ে গিয়ে আবার ঢুকবে। উভয় পক্ষের ৩০ জন করে আদালতকক্ষে থাকতে পারবে।সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে, বলেন, আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত মোট আইনজীবীর সংখ্যা ৬১৩ জন।এর মধ্য থেকে ৩০ জন করে দুই পক্ষের আইনজীবী ভিতরে ঢুকতে পারবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে বাকি সবাই বাইরে থাকবেন, প্রধান বিচারপতির এমনই আদেশ, ছিল সুপ্রিম কোর্টে।