
দেশে করোনা প্রবেশের একশো দুই দিন হয়ে গেল, আগ্রাসন কোনভাবেই থামানো যাচ্ছেনা। সারা বিশ্বে বিভিন্ন প্রান্তের খবরাখবর নিয়েছি। সিংহভাগ দেশের গ্রাফ উন্নতির দিকে, বাংলাদেশ কেবল অবনতির দিকেই যাচ্ছে। অর্থ্যাৎ, বিগত একশো দিনের সমস্ত সরকারি প্রচেষ্টা ব্যর্থ।এতে না হয়েছে দেশের অর্থনীতির উন্নতি, না হয়েছে সঠিকভাবে করোনা মোকাবেলা। মাঝখানে প্রাণ হারালেন এই সময়ের অমূল্য রত্ন প্রায় চল্লিশজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, আরো দেড় হাজার আক্রান্ত। পুলিশ সদস্য মারা গেছেন আঠাশ জন। নার্স, ফায়ার ব্রিগেড, সেনাবাহিনী, আনসার, ফার্মাসিস্ট, সাংবাদিক ও ব্যাংকারসহ ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধাদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
প্রতিদিই বাড়ছে আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা। কোন সুখবর কোথাও নেই বললেই চলে। বরং এমন পরিস্থিতিতে দেশের সুযোগসন্ধানী মুনাফাখোররা বরাবরের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে ঔষধ অক্সিজেনসহ মেডিক্যাল ইকুইপমেন্টসের দাম আকাশচুম্বী করে রেখেছে। ফলে করোনা আক্রান্তদের ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে চিকিৎসা খরচ।সরকারি হিসেবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ৬০% নিয়ন্ত্রণ করে বেসরকারী হাসপাতালগুলো। গ্রীন লাইফ কিংবা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের মত হাসপাতালগুলোতে বেড অক্সিজেনের অভাব নেই। কিছু আছে সরকারী হাসপাতালের চেয়ে বেশী ফ্যাসিলিটিজ সেখানে।
এই মূহুর্তে সরকারের উচিত এই বেসরকারী হাসপাতালগুলোকে জরুরীভিত্তিতে করোনা চিকিৎসায় ইনভলব করা। কালবিলম্ব না করে এক্ষুনি প্রয়োজন মিনিমাম দুই সপ্তাহের কারফিউ জারী করা। গত একশো দিনের অভিজ্ঞতা বলে লকডাউন দিয়ে লাল-সবুজ-হলুদ জোন করে কোন লাভ হবেনা। কঠোর কারফিউ ছাড়া করোনা সংক্রমণ ঠেকানো অসম্ভব।দুই সপ্তাহ বাসায় থাকলে এমনিই করোনা নেগেটিভ আসবে। মানুষ পথে পথে ঘুরে রোগ ছড়িয়ে দিচ্ছে। কয়দিন পর দলে দলে মানুষ মরবে ঝরা পাতার মত। বেসরকারি হাসপাতালগুলো অকিউপাই করলে এই ফাঁকে সরকারি হাসপাতালগুলো নিজেদের আবার প্রস্তুত করে নিতে পারবে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের জন্য।
দেশে মাসের পর মাস অবরোধ ছিলো, মানুষ না খেয়ে মরেনি। সব সরকারি সার্ভিসে হটলাইন চালু করে কারফিউ দেয়া এখন অবশ্য কর্তব্য বলে মনে করি। বিদ্যুৎ বিল এবং ভোটার স্লিপের মত হটলাইন থেকে তথ্য অনুযায়ী মানুষকে খাবার পৌঁছে দেয়া সম্ভব।জনমত গার্মেন্টস ফলের মৌসুমসহ নানান চিন্তা মাথায় রেখে সরকার কারফিউ দিচ্ছেনা। পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ অবস্থার দিকে এগুচ্ছে সেটা বুঝতে বেশী গবেষণার প্রয়োজন নেই। বিশ্বের সব দেশ যেখানে আস্তে আস্তে সমস্যা কাটিয়ে উঠছে সেখানে আমরা এখনো টার্গেটলেস ‘বোট’ এর মত অনিশ্চয়তার সাগরে খাবি খাচ্ছি।
গত একশো দিনে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে আমার আজকের এই লেখা। করোনার ভ্যাকসিন কবে বের হবে, আদৌ বের হবে কিনা, বের হলে আমরা পাবো কিনা সেরকম কোন নিশ্চয়তা নেই।অবিলম্বে দুই সপ্তাহের কঠোর কারফিউ বলবৎ করা হোক করোনা মোকাবেলায়। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশে মহামারী সন্নিকটে। আমার এই উদ্ধত পোষ্টের জন্য প্রয়োজনে জেলে পাঠিয়ে দিন, তবুও কারফিউ বলবৎ করুন মাননীয় সরকার। প্লীজ..