
চুক্তির টাকা তুলতেই বেপরোয়া চালক-হেলপার’ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলেও বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থীর কাছে পুরো ভাড়া দাবি করেন ঠিকানা এক্সপ্রেস লিমিটেড পরিবহনের চালকের সহকারী। ভাড়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশালীন আচরণ ও হেনস্থা করা হয়। বাস মালিকের সঙ্গে দৈনিক চুক্তিভিত্তিক বাস পরিচালনার জেরে বাড়তি লাভের আশায় হাফ ভাড়া নিতে রাজি ছিল না ওই চালক ও তার সহকারী।
যার ফলে শিক্ষার্থীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন হেলপার।রোববার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঠিকানা পরিবহনের ওই চালক মো. রুবেল ও সহকারী মো. মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার মূলহোতা হেলপার মেহেদী হাসান ওই ছাত্রীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও অশোভন আচরণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ওই শিক্ষার্থী ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ জানালেও প্রাথমিকভাবে বিষয়টি তিনি স্বীকার করেননি।রোববার (২১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।ঘটনার বিবরণে তিনি বলেন, হেনস্থার শিকার ভুক্তভোগী বদরুন্নেসার ওই শিক্ষার্থী কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, শনিবার (২০ নভেম্বর) সকালে তিনি শনিরআখড়া থেকে কলেজে যাওয়ার জন্য ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। তিনি শিক্ষার্থী হিসেবে হাফ ভাড়া দিতে চাইলে হেলপার মেহেদী হাসান তা নিতে রাজি হননি। এ নিয়ে একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডার জেরে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকরভাবে কথা বলেন মেহেদী। এমনকি ওই শিক্ষার্থী যখন বাস থেকে নামছিলেন তখন তাকে হেনস্থা করা হয়।
বিষয়টি শিক্ষার্থী মহলে ছড়িয়ে পড়লে তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঢাকার আরও ৬-৭টি কলেজের শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। রোববার (২১ নভেম্বর) সকালে বকশিবাজার সড়ক অবরোধ করা হয় এবং তাদের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
একটি কুচক্রী মহল বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করে। এর প্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০-এর অভিযানে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ঠিকানা পরিবহনের ওই চালক ও হেলপারকে গ্রেফতার করা হয়।আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, রুবেল ও মেহেদী দৈনিক তিন হাজার টাকার চুক্তিতে মালিকের কাছ থেকে বাসটি নিয়ে চালাতেন।
চুক্তির টাকা তুলতেই বেপরোয়া চালক-হেলপার’ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ তিন হাজার টাকার বেশি যা উঠতো তা দুইজন ভাগ করে নিতেন। বাড়তি লাভের আশায় তারা পরস্পরের যোগসাজশে অর্ধেক ভাড়া নিতে চাইতেন না। এর ফলে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশোভন আচরণ ও তাকে হেনস্থা করেন তারা।এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বাসচালকের সহকারী হাফ ভাড়া নিতে ইচ্ছুক ছিল না। অধিক মুনাফা ও বাড়তি টাকা উঠানোর জন্যই তারা এমনটি করেছেন।