
আমি মাসুদুর রহমান মাসুদ, সাবেক ফুটবলার, চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব সদস্য। আমার বাবা মরহুম আবু জাফর স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব সাবেক ফুটবলার। সাবেক ফুটবল সম্পাদক ১৯৭২-১৯৭৩ সি.জে.কে.এস সাবেক ফুটবলার, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক। বর্তমান পরিস্থিতি ক্রীড়াঙ্গন সহ সকল প্রতিষ্ঠান অশুভ শক্তি, হাইব্রিড নেতাদের কাজে জিম্মি হয়ে পড়েছে। বর্তমান ক্রীড়াঙ্গণের যে অবস্থা তাতে মনে হয় আগামী দিনগুলো ক্রীড়াঙ্গন অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। বর্তমানে খেলাধূলার অবস্থা আগামী দিনগুলোতে
ক্রীড়ামোদী ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব খুজে পাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয় না। সত্যিকার ক্রীড়ামোদী ও ক্রীড়া সংগঠক তাদের কোথায়ও জায়গা হয়না। তাদের কোন চেয়্যার নেই। খেলাধূলা এখন অশুভ রাজনীতিবিদরা পরিচালিত করছে। আমাদের দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়া প্রেমী একজন। দেরী হলেও তার নির্দেশে যে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে আমি একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে আন্তরিক স্বাগত ও সাধু বাধ জানাই। এই ধারাবাহিকতা সব সময় যেন থাকে, ঢাকাতে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান চলছে। অশুভ রাজনীতিরা গডফাদাররা যেভাবে ক্রীড়াঙ্গনে ঢুকে পড়ছে ক্রীড়াঙ্গন ভবিষ্যতে
আলোর মুখ দেখবে বলে আমার মনে হয় না। যত তাড়া-তাড়ি এই অশুভ শক্তিগুলোকে তাড়ানো যায়, তত তাড়া-তাড়ি ক্রীড়াঙ্গনে মঙ্গল বয়ে আনবে। স্বাধীনতার আগে আমার বাবা ফুটবলার ছিলেন ১৯৬২ সাল থেকে চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলে আসছিলো। তখন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব পরিচালিত হত আন্দরকিল্লা মাননীয় মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছিরের বাসার সামনে। পিতা মরহুম মঈনুদ্দিন চৌধুরী আ.জ.ম নাছিরের বাবা ওনার বাসার সামনে মোহামেডান ক্লাব পরিচালিত হত। তখন আমার বাবা ফুটবলার হিসেবে মোহামেডান ক্লাব এর সাথে জড়িয়ে পড়ে। ১৯৭১
মুক্তি যুদ্ধের সময় যুদ্ধ করতে চলে যায়। তার অনেক সঙ্গী প্রয়াত হয়েছেন। উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরী, ব্যারিষ্টার সুলতান কবির চৌধুরী সাবেক এমপি, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, রুহুল আমিন, ফরিদ আহমেদ (গোল্ডেন ইন), এটিএম এসহাক মোহনসহ আরো অনেকে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। তার বন্ধু নিজাম উদ্দিন চৌধুরী তখন ফুটবলার ছিলেন। তিনি এখন অসুস্থ অবস্থায় আছে। ১৯৭২ সালে মাননীয় মেয়রের বাবা মঈনুদ্দিন চৌধুরী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব’র দায়িত্বভার আমার বাবা
মরহুম আবু জাফর’র হাতে তুলে দেয়। তখন আমার বাবা মরহুম আবু জাফর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে সদরঘাট এলাকায় প্রতিষ্ঠিত করে। পূর্ব মাদারবাড়ী সাবেক এমপি মরহুম হাজী ইদ্রিস সাহেবের বাসায় একটি কমিটি গঠন করে। মরহুম হাজী ইদ্রিস সাহেবকে সভাপতি ও মরহুম আবু জাফর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে একটি কমিটি গঠন করেন।
আস্তে আস্তে চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক জাতীয় ফুটবলার খেলেছেন কাজী সালাউদ্দিন, সাব্বীর, প্রয়াত মনোয়ম মুন্না (বড় মুন্না), সালাম মুর্শিদী,
চলমান পাতা-০২
পাতা-০২
বাদল রায়, আরিফ খান জয়, পনির, জাকির, লিটন, নজরুল, সুজন, ইউসুফ, মিঠুনরা খেলে থাকেন। বর্তমানে জাতীয় ফুটবল দলের স্টাইকারন জীবন ও আছে। আজ এই পরিস্থিতি দেখে মনে হয় কিছু অশুভ শক্তি রাজনীতির ছত্রছায়ায় ক্রীড়াঙ্গনকে জিম্মি করে ফেলেছে। ঢাকা যে ক্যাসিনো দেখে অভাক হয়েছি, ক্যাসিনোর লুটেরা অবৈধ টাকার। আর যদি এই টাকা ক্রীড়াঙ্গনে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হতো বাংলাদেশে মেসি, রোনালদোমত ফ্রান্স, জার্মানি, ইংল্যান্ড, ব্রাজিল ও ইংলিশ ক্লাব থেকে খেলোয়াড় আনা যেতো। অবৈধ ব্যবসা সারা দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে ধ্বংস করছে। ১৯৭৫
সালে’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন সারাদেশে কালো ছায়া নেমে আসে। তখন আমার বাবা মরহুম আবু জাফর ফুটবলকে চালানোর জন্য আমার মার গহণা ও জায়গা বিক্রি করে দেয়। ঢাকার ক্যাসিনোতে প্রশাসনের অভিযানে অভিযানে যে সব অবৈধ টাকা উদ্ধার হয়েছে সেই টাকা ক্রীড়াঙ্গনের ফান্ডে জমা দিয়ে টাকাগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের যে সকল মাঠ খেলার অনুপযোগী সে সকল মাঠকে সরকারীভাবে মাঠগুলোকে খেলার উপযোগী করে তুলতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। এটা সত্য যে, চট্টগ্রামের ক্লাব ঘরের
আশেপাশের ব্যবসায়ী ভাইরা বসে একটু চা-পানি খেয়ে আড্ডা করে কিছু সময় কাঠায় এবং তাদের থেকে উলিংলি তারা স্পোন্সার এবং ডনেশন দেয়, তা দিয়ে আমাদের খেলা সি.জে.কে.এস’র ইভেনগুলো চালায়। বর্তমানে আমাদের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামিম নিজের পকেট থেকে এবং কিছু স্পোন্সার জোগাড় করে খেলাগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম ডিবিশন ফুটবলে তিন তিন বার চ্যাম্পিয়ন হয় বর্তমান সাধারণ সম্পাদকরে সময় যাহা ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম মোহামেডান একটা সাফল্য অর্জন করে। পেশাদার লীগ খেলতে গিয়ে চট্টগ্রামের ক্লাব ঢাকায়
খেলতে গিয়ে ক্লাবের কর্মকর্তা হিমশিম খেয়ে পড়ে। ৩/৪ বছর ধরে পেশাদার লীগ খেলা হয়না টাকার কারণে। যখন আমরা চট্টগ্রামে ক্রিকেট, হকি, বলিবল, ফুটবল বিভিন্ন ইভেন্ট সি.জে.কে.এস.’র আওতাভুক্ত খেলাগুলোয় অংশগ্রহণ করতে অনেক কষ্ট ও হিমশিম হয়ে পড়ে। চট্টগ্রামের আবহনী ক্লাব একটি সুনামধন্য ক্লাব। ওখানেও অনেক নামি-দামি খেলোয়াড়রাও খেলেছেন। স্বাধীনতার পর থেকে এই আবাহনী ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে একমাত্র পেশাদার ফুটবল খেলে থাকেন চট্টগ্রামে আবহনী ক্লাব। চট্টগ্রামের উজ্জ্বল ভাবমুর্তি রক্ষা করে ঢাকায় খেলে কষ্ঠ হলেও তারা পেশাদার লীগ
ফুটবল চালিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার একটা জোরদাবী চট্টগ্রামে ক্রীড়াঙ্গনের যতগুলো মাঠ আছে তা পুনঃসংস্কার করে ক্রীড়ামোদী, ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য জায়গা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। সরকারের নির্দেশনায় প্রশাসনের সহযোগিতায় অবৈধ ক্যাসিনোতে অভিযান সারা বাংলাদেশের মানুষ স্বাগত জানিয়েছে। ইতিমধ্যে ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনীতি ও দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। ক্রীড়ামোদী ও ক্রীড়া ব্যক্তিদের তাদের জায়গা করে দিতে হবে। তারা মনে হয় আজ অবহেলিত। নির্বাক অভাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। সরকারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনের যোগ্য ব্যক্তিকে ক্রীড়াঙ্গনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।