আরিফুল ইসলাম সুমন, নিজস্ব প্রতিবেদক।
উল্লাসকর দত্তের বাড়িঃ
বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের জন্ম হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কালিকচ্ছ গ্রামে। তাঁর পিতার নাম দ্বিজদাস দত্ত । তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ এর ছাত্র ছিলেন এবং পরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় হতে কৃষি বিদ্যায় ডিগ্রি অর্জন করেন।
বিপ্লবী কর্মকান্ডঃ
উল্লাসকর দত্ত “যুগান্তর” দলে যোগ দেন। তিনি বিস্ফোরক নির্মাণে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তাঁর ফর্মূলায় তৈরী বোমা পরীক্ষা করার জন্যে একদল বিপ্লবী বেছে নেন দেওঘরের নিকট নির্জন দীঘারিয়া পাহাড়।
১৯০৮ সালের ১ মে সেই পরীক্ষার দিন, বোমা ছোঁড়ার সময় আহত হয়ে মারা যান বিপ্লবী প্রফুল্ল চক্রবর্তী। এসময় উল্লাসকর দত্ত মারাত্মক জখম হন। তাঁকে গোপনে কলকাতায় চিকিৎসা করেন ডাক্তার ও বিজ্ঞানী ইন্দুমাধব মল্লিক।
উল্লাসকর দত্তের তৈরি বোমাই ক্ষুদিরাম বসু ও হেমচন্দ্র দাস তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে আক্রমণে ব্যবহার করেছিলেন।
তবে এই হামলা বানচাল হয়ে যায় এবং পুলিশ উল্লাসকর দত্ত সহ যুগান্তর দলের অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করে।
বিচার ও সাজাঃ
উল্লাসকর দত্ত ২ মে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে মুরারিপুকুর বাগানে ধরা পড়েন । ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে আলিপুর বোমা মামলা নামের এই বিখ্যাত মামলায় উল্লাসকর দত্ত এবং বারীন ঘোষকে ফাঁসীর আদেশ দেয়া হয়। তবে পরবর্তীকালে এই সাজা রদ করে তাঁকে আন্দামানের সেলুলার জেলে যাবজ্জ্বীবন দ্বীপান্তরের সাজা দেয়া হয়।
উল্লাসকর দত্ত পরবর্তীতে ১৯৩১ সালে আবারো গ্রেফতার হন এবং তাঁকে ১৮ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। ১৯৪৭ এ ভারত বিভক্ত হওয়ার পর তিনি নিজ জন্মভূমি কালীকচ্ছ গ্রামে ফিরে আসেন।
১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে উল্লাসকর দত্ত ৬৩ বছর বয়সে বিশিষ্ট নেতা বিপিন চন্দ্র পালের বিধবা মেয়েকে বিয়ে করেন। কালীকচ্ছে দীর্ঘ ১০ বছর কাটানোর পর তিনি ১৯৫৭ সালে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন। উল্লাসকর দত্ত তাঁর শেষ জীবন শিলচরে কাটান এবং সেখানেই ১৯৬৫ সালের ১৭ই মে মৃত্যুবরণ করেন।