মো. নুরুল আফছার : কোভিড-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরাইলি হামলা এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন অনেকটা বাধাগ্রস্ত। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি, জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি ও ডলারের মূল্য সমন্বয়ের কারণে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে দেশের অর্থনীতি বেশ চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং ইলেকট্রনিকস খাতও কিছুটা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর এলসি প্রদানে বিলম্ব হওয়ায় যথাসময়ে কাঁচামাল নিশ্চিত করে উৎপাদন প্রক্রিয়া ঠিক রাখা কঠিন হচ্ছে। তবে বাজার চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করে কাঁচামাল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন ও বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা করে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে হোম অ্যাপল্যায়েন্স খাতকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে সরকার শুল্ক, কর, ভ্যাট অব্যাহতিসহ নানা সুবিধা দিয়ে আসছে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজারটা অনেক বেশি বিকশিত এবং অগ্রগতি লাভ করেছে।
মো. নুরুল আফছার : সম্প্রতি গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে আমাদের দেশেও উষ্ণতা বাড়ছে। প্রতিবছরই আমাদের তাপমাত্রা বাড়ছে ১ থেকে ২ ডিগ্রি। যে কারণে দিন দিন এসির চাহিদা বাড়ছে। কয়েক বছর ধরে প্রতিবছরই এর ব্যবহার ৭-১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। গ্রাহকদের কথা বিবেচনায় রেখে এবং বাজার ধরে রাখতে আমরাও তাই সাশ্রয়ী মূল্যে আরও ভালো পণ্য ও সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায়, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, নগরায়ণের ফলে একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নেওয়ার আকাক্সক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজারটা অনেক বেশি বিকশিত হয়েছে। গ্রাহকের চাহিদা পূরণে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। এখন আমরা কমপ্লিট মেনুফ্যাকচারিং করি যেখানে ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ডের গায়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ লাগানো হচ্ছে। এসি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। সেসব মোকাবিলা করেই আমরা দেশের মানুষের চাহিদা পূরণে আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাগুলো বৃদ্ধি করে বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই এসি তৈরি করছি।
মো. নুরুল আফছার : আমরা প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন প্রযুক্তি আমাদের পণ্যে সংযোজন করছি। আমাদের আরএন্ডডি চায়নার সঙ্গে যৌথ প্রযুক্তি শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের এসিগুলো বাংলাদেশের পরিবেশ এবং গ্রাহকদের কাক্সিক্ষত প্রয়োজনের সঙ্গে মানানসই করে প্রস্তুত করা হয়। বাংলাদেশের ক্রেতারা এসি কেনার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। ক্রেতাদের এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে গ্রী এসি উৎপাদন করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যেমন-আই ফিল টেকনোলজি। এই টেকনোলজির মাধ্যমে যেমন ইলেকট্রিসিটি সেভিং হবে পাশাপাশি কমফোর্টেবল টেম্পারেচার পাওয়ার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। যেমন বাইরে টেম্পারেচার ৪০ ডিগ্রি থাকলে আমার কমফোর্টেবল টেম্পারেচার আসলে কত এটি আমরা জানি না। যার কারণে কখনো ১৬, কখনো ১৮, কখনো ২০ এ টেম্পারেচার সেট করছি। তবে আই ফিল অপশনটি যদি চালু করা হয় সে ক্ষেত্রে এসি অটোমেটিক রুমে টেম্পারেচারকে কমফোর্ট করে দেবে। আমাদের রয়েছে বিশ্বের সর্বপ্রথম জি বুস্ট ইনভার্টার কম্প্রেসার যার মাধ্যমে এসির স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে সর্বোচ্চ লেভেলের ইলেকট্রিসিটি সেভিং করে। আমাদের জি বুস্ট ইনভার্টার কম্প্রেসার সমৃদ্ধ গ্রী এসিগুলো সিক্সটি এইট ডিগ্রি টেম্পারেচারেও নরমালভাবে চলবে। এছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার যেটি কোল্ড প্লাজমা প্লাস এবং হিউমিডিটি কন্ট্রোলার। এর মাধ্যমে রুমের ভেতরের বাতাসে যে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু থাকে সেগুলোকে ৯৯.৯৯% পর্যন্ত ডিএক্টিভ করে এবং হিউমিডিটি ব্যালেন্স করে। যার ফলে দীর্ঘ সময় এসির মধ্যে থাকলেও শরীরের স্ক্রিন শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে, হাঁচি-কাশিজনিত সমস্যা বা কোল্ড অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা হয় না। বর্তমানে ঢাকা সিটির আবহাওয়া মারাত্মকভাবে দূষিত হওয়ার কারণে আমরা আমাদের এসিতে ছয় স্তরের ফিল্টার যোগ করেছি। যার মাধ্যমে রুমের বাতাস থাকবে ৯৯.৯৯% পর্যন্ত পিউরিফায়েড। এ কারণেই প্রযুক্তিগত দিক থেকে আমাদের এসি বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের প্রায় ২০০টিরও অধিক দেশে বেশ সমাদৃত।
মো. নুরুল আফছার : আমাদের কোম্পানির পণ্য কেনার ক্ষেত্রে প্রায় ৩৫টি ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডসহ নগদ এবং মাসিক ৩ থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে আমাদের বিভিন্ন ধরনের শোরুম, ডিসপ্লে সেন্টার, পার্টনার ও ডিলারদের মাধ্যমে পণ্য কেনার সুযোগ রয়েছে। আমাদের নিজেদের শোরুম থেকেও কিস্তিতে পণ্য কেনা যায়। আমাদের কাছ থেকে নিলে ১২ মাস পর্যন্ত কিস্তিতে ক্রয়ের সুবিধা দিয়ে থাকি।