
নিউজ ডেস্কঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, রোববার প্রথম প্রহরে (শনিবার রাত ১২টা ১ মিনিটের) সময় দণ্ড কার্যকর করা হবে। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল উদ্বোধন হওয়া এ কারাগরে এটাই হবে কোনো আসামির ফাঁসি কার্যকরের প্রথম ঘটনা।
সরকারের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর কারা-কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যার পর থেকেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আনুষ্ঠানিকতাগুলো এগিয়ে নিতে থাকে। কারাগারের ফাঁসির মঞ্চও প্রস্তুত করা হয়েছে।অতিরক্ত আইজি প্রীজন্স, ডিআইজি প্রীজন্স, সিনিয়র জেল সুপার, ঢাকার সিভিল সার্জন, কারাগারের দুজন সহকারী সার্জন, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি রাত ১১টার মধ্যে কারাগারে প্রবেশ করেন। মৃতদেহ রাখার জন্য আগেই কফিন এনে রাখা হয়েছে। কারাগারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাজেদের দণ্ড কার্যকরে প্রধান জল্লাদ থাকবেন শাহজাহান, তার সহকারী হিসেবে থাকবেন মনির ও সিরাজ।
২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি এই শাহজাহানই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), এ কে বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনের (আর্টিলারি) ফাঁসি কার্যকর করেছিলেন আজও তিনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করবেন বলে জানা যায়। মাজেদের স্ত্রী সালেহা বেগম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, কারা-কর্তৃপক্ষ রাত ১১টার পর তাদের কেরানীগঞ্জ কারাগারে যেতে বলেছে। মাজেদের গ্রামের বাড়ি ভোলার বোরহান উদ্দিনে দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
চার মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ঢাকা সেনানিবাসের এক নম্বর রোডের একটি বাসায় থাকেন মাজেদের স্ত্রী সালেহা। শুক্রবার বিকালেও তিনি তার ভাই-বোনসহ কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে কারাগারে গিয়ে মাজেদের সঙ্গে দেখা করেন আসেন। তখনও ছেলে-মেয়েরা তার সঙ্গে ছিলেন না। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যে ছয় আসামি পলাতক ছিলেন, ক্যাপ্টেন মাজেদ তাদেরই একজন। ৭২ বছর বয়সী মাজেদকে গত মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর আদালতের আদেশে মাজেদকে নিয়ে যাওয়া হয় কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে। গত বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। দীর্ঘদিন পলাতক থেকে আপিলের সুযোগ হারানো মাজেদ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তাও খারিজ হয়ে যায়।গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছিলেন, প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর এখন মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে কোনো বাধা নেই। আর তা হতে পারে ‘যে কোনো সময়’।