
পৃথিবীর ইতিহাসে পবিত্র কাবা ঘর এক মিনিটের জন্য কখনো তাওয়াফ বন্ধ করা হয়নি, এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যদি মানুষ কাবাঘর তাওয়াফ করতে না পারেন আল্লাহর পক্ষ থেকে আবাবিল পাখিকে দিয়ে আল্লাহর কাবা ঘর তাওয়াফ করিয়েছেন, যার প্রমাণ গেল কয়েকদিন আগে বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবীর সবকিছু যখন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, সেই সময় আল্লাহর কাবা ঘরের চারপাশে পরিষ্কারের জন্য কিছুক্ষণের জন্য তাওয়াফ বন্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু আল্লাহর হুকুমে আবাবিল পাখি এসে খানায়ে কাবার চারপাশে তাওয়াফ করতে থাকেন, এই নিয়ে বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়ে যায়।
এবার আসুন জেনে নেয় পৃথিবীর ইতিহাসে পবিত্র হজ্ব কত বারের জন্য বাতিল করা হয়েছিল। প্রথমবার হজ্ব বাতিল হয়েছিল ৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে, আব্বাসীয়দের সময়, ইসমাঈল বিন ইউসুফের মক্কা আক্রমণের কারণে। এরপর বন্ধ হয়েছিল ৯৩০ সালে। কট্টর শিয়া গ্রুপ কারমাতিদের আক্রমণে। সে বছর ৩০,০০০ হাজি শহীদ হয়েছিলেন। তারা হাজিদেরকে হত্যা করে তাদের লাশ জমজম কুপে ফেলে দিয়েছিল। ফিরে যাওয়ার সময় তারা সাথে করে হাজরে আস্ওয়াদ বাহরাইনে নিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে হাজরে আসওয়াদ পুনরুদ্ধার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এক দশক হজ্ব বন্ধ ছিল। ৯৮৩ থেকে ৯৯০ সাল পর্যন্ত হজ্ব বাতিল বা বন্ধ হয়েছিল রাজনীতির কারণে।
ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক আব্বাসীয় খিলাফত এবং মিসর ভিত্তিক ফাতেমীয় খিলাফতের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে সেবার ৮ বছর পর্যন্ত পবিত্র হজ্ব বন্ধ ছিল। শুধু যুদ্ধ-বিগ্রহ না, মহামারীর কারণেও হজ্ব বাতিল হয়েছিল। প্রথমে ১৮১৪ সালে হেজাজ প্রদেশে প্লেগের কারণে, তখন ৮,হাজার মানুষ মারা যাওয়ায় হজ্ব বাতিল করা হয়েছিল তখন। এরপর ১৮৩১ সালে ভারত থেকে যাওয়া হজ্বযাত্রীদের মাধ্যমে মক্কায় প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে এবং চারভাগের তিনভাগ হাজী মৃত্যুবরণ করেছিল।
ফলে সে বছরও হজ্ব বাতিল করা হয়। এছাড়াও ১৮৩৭ থেকে ১৮৫৮ সালের মধ্যে প্লেগ এবং কলেরার কারণে তিন বারে মোট ৭ বছর হজ্ব বন্ধ ছিল। ইসলাম অবাস্তব কোনো ধর্ম নয়, এলিয়েনদের জন্য আসা ধর্ম নয়। এটা মানুষের শান্তির জন্য আসা ধর্ম। এবং মানুষের সাধ্যের বাইরে এখানে কিছু করতে বলা হয়নি।তথ্যসূত্র: হারাম শরিফের ওয়েবসাইট, মিডল ইস্ট আই, টিআরটি, দ্য নিউ আরব। আশা করি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ বছর হজ্জ্বের পূর্বেই সারা পৃথিবী হতে করোনাভাইরাস ধ্বংস করে মুসলমানদের সবাইকে একসঙ্গে হজ্ব করার তৌফিক দিবেন। আমিন।