
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা সংক্রমণের তথ্য নিয়ে রহস্য করছে হোয়াইট হাউস। এতে ধোঁয়াশা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ পরিবেশনে মার্কিন গণমাধ্যমকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।ট্রাম্প করোনামুক্ত কি না, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তা এখনো জানানো হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর অন্যদের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক। ট্রাম্পের করোনা সংক্রমণের বিষয়টি এভাবেই ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের পর জনসমক্ষে যাওয়ার আগে করোনার টেস্টিং রেজাল্ট নেগেটিভ কি না, এ নিয়ে পরিষ্কার কোনো বক্তব্য না পাওয়ায় মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।ট্রাম্প করোনামুক্ত কি না, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তা এখনো জানানো হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর অন্যদের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক। ট্রাম্পের করোনা সংক্রমণের বিষয়টি এভাবেই ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে
১০ অক্টোবর হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক সেইন কনলি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আইসোলেশন থেকে বেরিয়ে আসার সব শর্ত পূরণ করেছেন। ১০ অক্টোবর সকালে কোভিড পিসিআর পরীক্ষায় দেখা গেছে, সিডিসির নির্দেশিকা অনুযায়ী তিনি আর অন্যকে সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নন। কিন্তু নিশ্চিত করে বলা হয়নি, ট্রাম্পের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ নাকি নেগেটিভ।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর মধ্যে ১০ অক্টোবর দুপুরের পর জনসমক্ষে এসেছেন।
হোয়াইট হাউসের বারান্দা থেকে বক্তব্যও দিয়েছেন।১০ অক্টোবর বিকেলে স্বাক্ষরিত স্মারকে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় থেকেই আর জ্বর নেই। তাঁর সব উপসর্গের উন্নতি হয়েছে।এসব তথ্য এখন নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শেষ কবে জ্বর ছিল? ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতাল থেকে হোয়াইট হাউসে ফিরেছেন। এর পরদিন বলা হয়েছে, ট্রাম্পের কোনো উপসর্গ নেই, তিনি পুরো সুস্থ।এরপর ১০ অক্টোবর বিকেলে হোয়াইট হাউসের বারান্দা থেকে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেছেন, করোনাভাইরাস শেষ হয়ে আসছে। এ ভাইরাস দ্রুতই উবে যাবে বলে তিনি সমর্থকদের বলেছেন। অনুষ্ঠানে কয়েক শ সমর্থক হাজির ছিলেন।
তাঁদের কেউ মাস্ক পরেছেন, কেউ মাস্ক পরে সমাবেশে প্রবেশ করে মাস্ক খুলেও ফেলেছেন।করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ইতিমধ্যে ২ লাখ ১৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখনো প্রতিদিন হাজারের কাছাকাছি মানুষের নাম যুক্ত হচ্ছে মৃত ব্যক্তিদের তালিকায়। শীতের আগমনী আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। অন্তত ১০টি রাজ্যে করোনা সংক্রমণ আবার বাড়ছে বলে স্বাস্থ্যসেবীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের কোনো কোনো এলাকায় নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত এপ্রিলে যা বলেছিলেন, এখনো তা–ই বলছেন। এ ভাইরাসের সংক্রমণকে তিনি কখনো গুরুত্ব দেননি।
এখন সমালোচকেরা বলছেন, ট্রাম্প সংক্রমিত হয়েও নিজেকে স্বাভাবিক দেখাতে গিয়ে করোনার ভয়াবহতাকে হালকা করে দেখানোর প্রয়াস নিচ্ছেন।স্বাস্থ্যসেবীরা মনে করেন, এতে জনগণের কাছে আবারও ভুল বার্তা যাবে। ভাইরাসের সংক্রমণে আরও বেশি মানুষের মৃত্যু হবে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন।সিডিসির নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো উপসর্গ না থাকা, ২৪ ঘণ্টার বেশি জ্বর না থাকা, টেস্টিং রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত রোগীকে কোয়ারেন্টিনে রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেলায় এসব মানা হচ্ছে না বলে সন্দেহ করা হচ্ছেসিডিসির নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো উপসর্গ না থাকা, ২৪ ঘণ্টার বেশি জ্বর না থাকা, টেস্টিং রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত রোগীকে কোয়ারেন্টিনে রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেলায় এসব মানা হচ্ছে না বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। কারণ, হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক কখনোই ট্রাম্পের অসুস্থতা নিয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেননি। ট্রাম্পকে একপর্যায়ে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে বলেও প্রথমে জানানো হয়নি।
ট্রাম্প সংক্রমণের শুরু থেকেই বলছেন, তিনি খুব ভালো বোধ করছেন। তাঁর কখনো জ্বর ছিল বলে কোনো ভিডিও বার্তায়ও তিনি বলেননি। ফক্স নিউজকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও ট্রাম্প নিজের স্বাস্থ্য–সমস্যা বা উপসর্গ নিয়ে তেমন কিছু বলেননি। তিনি কেবল বলেছেন, ওয়াল্টার রিড সামরিক হাসপাতাল অনেক ভালো। সেখানে অনেক যন্ত্রপাতি তিনি দেখেছেন, যা আগে কখনো দেখেননি।ঠিক কবে থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প করোনা সংক্রমিত, তা নিয়েও বিভ্রান্তি আছে। ১ অক্টোবর জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি সবার সামনে হেঁটে হেলিকপ্টারে ওঠেন এবং হাসপাতাল থেকে তিন দিন পর হেলিকপ্টারে করেই হোয়াইট হাউসে ফেরেন।এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে বসে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন, টুইট করেছেন, নাগরিক প্রণোদনা নিয়ে সমঝোতা আলোচনা বাতিল করেছেন, আবার কয়েক ঘণ্টা পর আলোচনা শুরু করার কথাও বলেছেন।এসবের মধ্যেই ১২ অক্টোবর ফ্লোরিডায় নির্বাচনী সমাবেশ করবেন ট্রাম্প। আসছে সপ্তাহে তাঁর অন্তত তিনটি প্রচার সভার কর্মসূচি রয়েছে।হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরলেও তাঁকে ক্রমাগত পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।