
সাতকানিয়ার দুই ইউপিতে নৌকাকে হটিয়ে স্বতন্ত্রের জয় সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত সাতকানিয়ার ১৪টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এরমধ্যে চারটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পায় নৌকার প্রার্থীরা। এছাড়া বাকি দুটিতে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। বেসরকারিভাবে নির্বাচিতরা হলেন— চরতি ইউনিয়নে মো. রুহুল্লাহ চৌধুরী (নৌকা), আমিলাইশ বিদ্রোহী প্রার্থী মোজাম্মেল হক চৌধুরী, নলুয়ায় মো. লেয়াকত আলী (নৌকা), কাঞ্চনায় রমজান আলী (নৌকা), খাগরিয়ায় মো. আকতার হোসেন (নৌকা), কালিয়াইশে হাফেজ আহমদ (নৌকা), ঢেমশায় মির্জা আসলাম সরওয়ার রিমন (স্বতন্ত্র), ধর্মপুরে নাছির উদ্দিন টিপু (নৌকা), বাজালিয়ায় তাপস কান্তি দত্ত (নৌকা), পশ্চিম ঢেমশায় রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন (বিদোহী)।
এরআগে কোন প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় কেওঁচিয়া ইউনিয়নে ওচমান আলী (নৌকা), পুরানগড়ে আ.ফ.ম. মাহবুবুল হক সিকদার (নৌকা), মাদার্শায় আবু নঈম মোহাম্মদ সেলিম (নৌকা) ও সাতকানিয়া সদরে মোহাম্মদ সেলিম (নৌকা) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।এরআগে ভোটের আগের রাত থেকেই বিছিন্নভাবে সাতকানিয়ার ইউপি নির্বাচনের উত্তাপ ছড়ায়। সেই উত্তাপ আরও বাড়ে সকালে ভোট শুরুর পর। সহিংসতার তীব্রতা এতোই বেশি ভয়ানক ছিল যে, ভোটে মাঠে প্রাণ গেছে শিশুসহ দুজনের।
এভাবেই দফায় দফায় সংঘর্ষ আর দুজনের প্রাণহানির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সাতকানিয়ার ১৬ ইউপির ভোট গ্রহণ। সকাল থেকে প্রায় সব ইউপিতে থেমে থেমে দুপক্ষের গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ ঘটনা ঘটেছে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে।
ভোটের শুরুতেই খাগরিয়ার গণিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খাগরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি ঘটনা ঘটে। এরপরই ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয় প্রিজাইডিং অফিসার।
এরপর দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় অতর্কিতে প্রতিপক্ষের সমর্থক মনে করে তাসিব (১৩) নামে এক শিশুকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এছাড়া বাজালিয়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকার প্রার্থী তাপস কান্তি দত্তের সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী শহীদুল্লাহ চৌধুরীর সমর্থকদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে আব্দুর শুক্কুর নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।
অন্যদিকে সকাল থেকে কালিয়াইশ, সোনাকানিয়া, কাঞ্চনাসহ কয়েকটি ইউনিয়নে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। উত্তর কাঞ্চনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর দফায় দফায় সংর্ঘষের কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে প্রশাসন।এদিকে সোনাকানিয়া ইউনিয়নে সকালে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম উদ্দিন চৌধুরী। এই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরার অভিযোগ উঠে পোলিং অফিসারদের বিরুদ্ধে।