
নিজস্ব প্রতিনিধি
অনেক জল্পনা-কল্পনার পর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে বেনাপোলবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার ১৭ জুলাই বেলা ১১ টার দিকে ভিডিও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বেনাপোল থেকে ট্রেন উদ্বোধন করেন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আজ বুধবার পূরণ হচ্ছে বেনাপোলবাসীর দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন এই ট্রেনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দুপুর সোয়া ১টায় ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এই ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ায় এক আনন্দের জোয়ার বইছে। ঢাকার সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াতের ব্যাপক সুবিধা হবে। এই রুটে প্রতিদিন প্রায় ৬
থেকে ৭ হাজার পাসপোর্টযাত্রী ভারতে যাতায়াত করে থাকেন। এই যাত্রীদের বেশির ভাগ আসেন ঢাকাসহ অন্যান্য জায়গা থেকে। পরিবহন সংকট, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে যানজটের কারণে যাত্রীরা নানামুখী হয়রানির শিকার হন। ফলে ট্রেন চালু হওয়ায় সেই হয়রানি লাঘব হবে বলে প্রত্যাশা সবার।এদিকে ঢাকার এক ব্যবসায়ী সোহেল আহমেদ বলেন আমি নিয়মিত বেনাপোল দিয়ে ভারতে ব্যবসার কাজে যাতায়াত করে থাকে এতে অনেক হয়রানি এবং ভোগান্তিতে পড়তে হয় এই ট্রেন উদ্বোধন হওয়ার পর আমি মনে করি আর কোনো ভোগান্তি পোহাতে হবে না টিকিট পাওয়ার কোন ঝামেলা থাকবে না অনলাইনে টিকিট কেটে নিতে পারব বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, আধুনিক এই বেনাপোল এক্সপ্রেসের
কোচগুলো (বগি) ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা হয়েছে। এতে বগি থাকবে ১২টি এবং আসন সংখ্যা ৮৯৬টি। এই ট্রেনে বিমানের মতো বায়ো-টয়লেট সুবিধা রয়েছে এবং আসনগুলোও আধুনিক।পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেনটি ইতোমধ্যে চালানো হয়েছে। অনলাইনসহ নতুন এই ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হবে দুয়েক দিনের মধ্যে। নন-এসি শোভন ৪৮৫ টাকা, এসি চেয়ার ৯৩২ টাকা, এসি কেবিন ১ হাজার ৬৭৪ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে যাত্রীদের আর কোনো চার্জ দিতে হবে না।বলে জানান রেল কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। আবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। সকাল ৮টার মধ্যে ট্রেনটি বেনাপোল
বন্দরে পৌঁছে যাবে। পথে যশোর, ঈশ্বরদী ও ঢাকা বিমানবন্দরে যাত্রী ওঠানো-নামানোর জন্য সাময়িক বিরতি থাকবে।বর্তমানে যশোর-ঢাকার মধ্যে যে ট্রেন সার্ভিস চালু রয়েছে তা ১৪টি স্থানে বিরতি দেয় এবং এতে সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা। সেখানে বেনাপোল-ঢাকা বিরতিহীন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৭ ঘণ্টায় যশোর ও ৮ ঘণ্টায় বেনাপোলে পৌঁছাবে।বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যশোর রেলওয়ে জংশনে পৌঁছে ১৫ মিনিটের বিরতি এবং এ সময়ে যাত্রী ওঠানো-নামানোসহ ইঞ্জিন ঢাকামুখী ঘোরানো হবে। পরে ঈশ্বরদীতে ট্রেনের চালকসহ অপারেশনাল কর্মী বদলের জন্য আরো ১৫ মিনিটের বিরতি থাকবে।ভারত থেকে ফেরা ঢাকার যাত্রী বেগম জাহানারা লাকী জানান, ঢাকা টু বেনাপোল ট্রেন সার্ভিস চালু হলে
আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে। সময় বাঁচবে, টিকেট হয়রানির শিকার হতে হবে না। পথে যানজটের শিকার হতে হবে না। আর এতে করে সরকারের অনেক রাজস্ব আয় হবে।আরেক যাত্রী ফাইম শাওন জানান, রাস্তা খুবই ভাঙাচোরা, আসা-যাওয়ায় যানজটে অনেক সময় লাগে, ফেরিঘাটে আমাদের প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়। ঢাকা থেকে বেনাপোল ট্রেনটি চালু হলে আমাদের যাত্রীদের অনেক সুবিধা হবে, সহজে যাতায়াত করতে পারব, কোনো যানজট ছাড়া মানুষ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে, আমাদের আসতে যে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সেগুলো থাকবে না আশা করছি।বেনাপোল সিএন্ডএফ সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস নামে যে ট্রেনটি বেনাপোল-ঢাকা চলাচল করবে এটা সরকারের বাস্তবভিত্তিক, অত্যন্ত
সাহসী, বাস্তবসম্মত ও প্রশংসনীয় একটি পদক্ষেপ।দেরিতে হলেও সরকার যে এই বন্দরনগরী বেনাপোলের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন যোগাযোগ স্থাপন করতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এটা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে যাতায়াত করেন। বাংলাদেশের অনেক রোগী ভারতে চিকিৎসা করাতে যান। সরকার এই যে বাস্তবভিত্তিক একটা পদক্ষেপ নিয়েছে আমরা বেনাপোলবাসী অর্থাৎ ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। এই ট্রেনটি চালু করা সরকারের সময়োপযোগী একটা উদ্যোগ বলে আমি মনে করি।বেনাপোল রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন দেশের ৫ থেকে ৬ হাজার লোক ভারতে
চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে যান। যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী বেনাপোল-ঢাকা একটি বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নেন। বেনাপোলে অবকাঠামো, ভিআইপি যাত্রীদের জন্য ওয়েটিংরুমসহ সব কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। ট্রেনটি চালু হলে যাত্রীসাধারণ স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে ঢাকা যেতে পারবেন। পর্যাপ্ত টিকেট থাকায় বেনাপোল যশোর-ঢাকাসহ সব জায়গা থেকে এই টিকেট পাওয়া যাবে। বেনাপোলসহ দেশবাসীর দীর্ঘদিনের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ হতে যাচ্ছে।গত ৩ জুলাই বেনাপোল স্টেশন পরিদর্শন আসেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এ সময় তিনি বলেছিলেন, আগামী ঈদের আগে প্রধানমন্ত্রী সুবিধাজনক সময়ে বেনাপোল-ঢাকা ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সময়ে এটা উদ্বোধন হবে।
ট্রেনটি বেনাপোল-যশোর-ঈশ্বরদী-ঢাকা নন-স্টপেজ চলাচল করবে। ভবিষ্যতে যাতে বড় পরিকল্পনা নিয়ে এখানে ভালো একটা আন্তর্জাতিক মানের স্টেশন গড়ে তুলতে পারি সে ধরনের ব্যবস্থা আমরা নেব।এদিকে ১৭ জুলাই বুধবার বেলা ১১ টার দিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ট্রেন এর শুভ উদ্বোধন করেন বেলা একটার পরে তুই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন ট্রেনটি ঢাকা এসে পৌঁছাবেন রাত ৯ টা ৩০ মিনিটের দিকে পরে আবার ট্রেনটি বেনাপোলের উদ্দেশ্যে ব্যাক করবে রাত সাড়ে বারোটার দিকে প্রতিদিন এভাবে নিয়মিত যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করবে এই ট্রেনটি