আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ভারত সরকারের দেয়া লকডাউনের কারণে ১৭ দিনের একটি শিশুকে নিয়ে তার মাকে হাঁটে হয়েছে ৫০০’কিলোমিটার,রাস্তা,করোনা,ভাইরাসেরসংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে দের মাস ধরে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। এই অবস্থায় ১৭ দিনের সন্তানকে কোলে নিয়ে গাড়ির খোঁজ করছিলেন ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের এক মা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেঁটে হেঁটেই তাকে পারি দিতে হয় ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ।
ভারতের জনপ্রিয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুম্বাই থেকে বিদর্ভ অঞ্চলের ওয়াশিমে যাচ্ছিলেন ওই নারী। দিনের পর দিন হাঁটতে হাঁটতে তার শরীরে জ্বর শুরু হয়ে যায়। তার ওপর নেই খাবারের কোনো ব্যবস্থা। ১৭ দিন আগে সন্তান প্রসব করেন তিনি। তবে পরীক্ষায় জানা যায় মা ও ছেলের কেউই করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়নি।সন্তান জন্মের কয়েকদিন পর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মুম্বাই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। শিশু সন্তানকে নিয়ে গাড়িতে বিদর্ভে ফেরার অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেন। কিন্তু পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরা ছাড়া তার আর কোনো উপায় ছিল না বলে জানিয়েছেন ওই নারী।
গত মাসে মুম্বাই পুলিশ ঘোষণা দিয়েছিল, শহর ছাড়ার আবেদন জানানো যাবে তাদের কাছে। তবে থাকতে হবে জরুরি কোনো প্রয়োজন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তাহলে কেন এক সদ্য মা হওয়া এক তরুণীকে বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি, তার কারণ স্পষ্ট নয়। চলতি সপ্তাহে মহারাষ্ট্রে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের (অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিক) চরম দুর্ভোগের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। যারমধ্যে অন্যতম নবি মুম্বাই থেকে বাড়ি ফিরতে চাওয়া ২০ জনের শ্রমিকের ঘটনা। পায়ে হেঁটে তাদের পেরোতে হয়েছিল ৪৮০ কিলোমিটারের দীর্ঘ পথ।
সেই দলের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী এনডিটিভিকে বলেন, টানা ১২ ঘণ্টা তিনি হেঁটে চলেছেন। বিশ্রাম নেওয়ারও সময় নেই। অন্যান্য শ্রমিকরা বলছেন, তাদের এছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। সরকার শ্রমিকদের জন্য ট্রেন চালু করলেও তাতে নেওয়া হচ্ছে ভাড়া। দিনমজুর এসব শ্রমিকের কাছে কোন টাকা পয়সা নেই। মহারাষ্ট্রে করোনা ভাইরাস প্রকোপ ভারতে সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে রাজ্যটিতে ১৭ হাজারের বেশি করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের ৬৫১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এদিকে গোটা ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে; মারা গেছে এক হাজার ৭৮৩ জনের।
