আবহাওয়া ডেস্কঃ
বিনা পারিশ্রমিকে এ গত ৩০ বছর ধরে ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকায় শাহ আলম মানুষের সেবা করে আসছে আজ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান থেকে মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়ে দিলেন সৈয়দ শাহ আলম। শাহ আলম। ৩০ বছর ধরে তিনি ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবন বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসেন। ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস এলেই অন্যের জানমাল রক্ষায় নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে ঝাঁপিয়ে পড়েন শাহ আলম। মানবসেবায় সুপার সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের থাবা থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে গত ২ দিন তিনি নিরলসভাবে কাজ করে আসছিলেন।
গতকাল বুধবার (২০ মে) সকালে আবহাওয়া অধিদফতর থেকে মোংলা ও পায়রা নদীবন্দর এবং তার সংলগ্ন জেলাসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সকাল ৯টায় নিজের ছেলে ও ২ জন সহকর্মী স্বেচ্ছাসেবককে সঙ্গে নিয়ে বিপন্ন মানুষের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসেন সৈয়দ শাহ আলম। কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী নদীর ওপারে যান বাংলাদেশ সরকার ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) টিম লিডার সৈয়দ শাহ আলম। সেখানে যাওয়ার পথে নৌকায় নদী পার হওয়ার সময় ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়েন। ডুবে যায় নৌকা। এতে মৃত্যু হয় সিপিপি টিম লিডার সৈয়দ শাহ আলমের।
নিহত সৈয়দ শাহ আলম জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোনদা গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ কদম আলীর ছেলে বলে জানা যায়। লোনদা গ্রাম এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর শরীফ জানান, সৈয়দ শাহ আলম মানবতার জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে উৎসাহ বোধ করতেন। কখনও নিজের কথা ভাবতেন না। সব সময় মানুষের কথা ভাবতেন। তিনি আরও বলেন, সৈয়দ শাহ আলম সব সময় মানবসেবাকে গুরুত্ব দিতেন। বিনা পারিশ্রমিকে গত ৩০ বছর যাবৎ মানবসেবা করতে গিয়ে সিপিপির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে আজকে তার মৃত্যু হলো।
তার মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ রকম মানুষ সমাজে বিরল। একই গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল মৃধা বলেন, শাহ আলম দাদু ২ জন ভালো মানুষ ছিলেন। তার মতো মানুষ হয় না। তার মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে সৈয়দ শাহ আলমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সিপিপি পরিচালক (অপারেশন) মো. নূর ইসলাম খাঁন অসি। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় যোদ্ধা সৈয়দ শাহ আলমের অকাল প্রয়াণে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। মহান আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসিব করুন। মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।