ছাতক প্রতিনিধি::
পানি নেমে যেতে না যেতেই নতুন করে সুরমা নদীর পানি বাড়ায় ছাতকে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। আগের বন্যার পানি ঘরবাড়ি থেকে নেমে যাওয়ার পরপরই আবারো ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে পড়েছে ছাতকের সর্বত্রই।সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,শুক্রবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে সুরমা নদী সহ সকল নদ-নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি এখানে আবারো ব্যাপক আকার ধারন করতে পারে।
ইতিমধ্যে বন্যায় পানির নিচে ডুবে গেছে অনেক রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শ ‘শ একর বীজতলা। ভোগান্তিতে পড়েছেন প্লাবিত এলাকার মানুষ। আগের বন্যার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে, যা এখনও কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়নি।এদিকে পানি বাড়ায় ছাতকের মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। প্রথম দফা বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই নতুন করে আবারো দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে পড়ায় বানভাসিদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। হাতে কাজ ও ঘরে খাবার না থাকায় চরম খাদ্যসংকটে পড়েছেন বন্যাদুর্গত মানুষ।
পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। শহরের নিম্নাঞ্চল এলাকার বাসাবাড়িতে আবারো বন্যার পানি ঢুকেছে। এখানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় চেরাপুঞ্জি সহ আশপাশ এলাকার ৫৫০ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসেবে শুক্রবার থেকে সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখনো সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ছাতকের সাথে সিলেট সহ দেশের সড়ক যোগাযোগ রাতেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতিমধ্যে উপজেলা সদরের সাথে ৮ টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।উপজেলার দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের শেওলাপাড়া গ্রামের গৌছ আলী বলেন, আমার ঘরে পানি নেমে গিয়েছিল কিন্তু আবারো বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে ঘর ডুবে যাচ্ছে।হাতে নেই কাজ, ঘরে নেই খানি, আগের পানির সময় আমার ঘরে বুকপানি ছিলো, আমি সরকারি কোন ধরনের ত্রান পাইনি, এই অবস্থায় বউ, বাচ্ছা নিয়ে খুব কষ্টে আছি।শুকুর নামের আরেকজন বলেন, পানি আমার বাড়ি উঠোনে। যদি পানি ভারতে থাকে তাহলে আবারো ঘর ডুবে যাবে।
স্থানীয় সাংবাদিক হাসান আহমদ যানান, প্রথম দফার বন্যায় যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখে খোঁজ খবর নিয়েছি এবং আমাদের এলাকায় রুহুল আমিন ফাউন্ডেশনের পক্ষথেকে ত্রান দিয়েছি তবে দুঃখের বিষয় হলো! যাদের ঘরবাড়ি বা বাড়ির উঠানে যাদের পানি উটেনি তারা সরকারী বরাদ্ধকৃত ত্রাণ পেয়েছেন! আর যারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তারা সরকারি ত্রান থেকে বঞ্চিত।ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ গোলাম কবির জানান, ছাতকে আবারো বন্যা হতে পারে এমন পূর্বাভাস জনসাধারণকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দূর্যোগ মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খুজখবর নিয়ে তাদের কে ত্রান দেয়া অব্যহত থাকবে।