ঝিনাইদহ প্রতিনিধি;
সরকারি-বেসরকারি ও এলাকাকায় থাকেন না এমন ব্যক্তিদের নিয়ে ঝিনাইদহের ছয় উপজেলা ও পৌর যুবদলের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি আহসান হাবীব রনক ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম পিন্টু স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে এ সকল কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটি নিয়ে ক্ষোভ এবং অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়লে কমিটি গঠনের দুই দিনের মাথায় শনিবার দুপুরে যুবদলের ৫ ইউনিট কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষনা করা হয়েছে। স্থগিতকৃত কমিটির মধ্যে রয়েছে শৈলকুপা উপজেলা ও পৌর, কালীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর এবং মহেশপুর উপজেলা যুবদলের কমিটি।
কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল সাক্ষরিত এক চিঠিতে এই ৫টি কমিটি স্থগিত করা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দীন টুকু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে খুব দ্রুত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিবেন। অভিযোগ উঠেছে, যুবদলের সদ্য ঘোষিত শৈলকুপা উপজেলা কমিটির আহবায়ক করা হয়ে জাহিদ চৌধুরি নামের একজনকে। কিন্তু তিনি ঢাকার আশুলিয়াতে সিলভার গার্মেন্টস এন্ড ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন।
একই উপজেলার পৌর শাখাতে আহবায়ক করা হয়েছে আনিচুর রহমানকে আনিচকে। তিনি ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পে চাকরি করেন বলে জানা গেছে। শৈলকুপা পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক আকুল অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে চাকরীজীবী ও ব্যবসায়ীদের পদ দেওয়া হয়েছে। শৈলকুপার নতুন আহবায়ক জাহিদ চৌধুরী গত নির্বাচনে নৌকার ভোট করেছেন। তিনি বলেন ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর আমিসহ নতুন আহবায়ক জাহিদ চৌধুরী, বিএনপি নেতা রাকিবুল হাসান খান দিপু ও সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ গ্রেফতার হয়ে নাশকতা মামলায় আসামী হলেও অদৃশ্য কারণে জাহিদ চৌধুরী পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে যায়।
আকুলের ভাষ্যমতে জেলা সভাপতি আহসান হাবীব রনক পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে এ সব পদ বিক্রি করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, সদ্য ঘোষিত যুবদলের কালীগঞ্জ উপজেলা কমিটিতে আহবায়ক করা হয়েছে মাহবুবুর রহমান মিলনকে। তিনি মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে চাকুরি করেন। এছাড়াও এক যুগ্ম আহবায়ক আকিজ কর্পোরেট ব্যাংক, কোটচাঁদপুর শাখায় ও সাইফুল ইসলাম টুটুল গ্রামীণ ব্যাংক বারবাজার শাখায় চাকরি করেন। আরেক যুগ্ম আহবায়ক আতিয়ার রহমান জীবন কালীগঞ্জে কোনদিন রাজনীতি না করলেও তিনি সদ্য ঘোষিত কমিটির পদে এসেছে। তিনি ঢাকাতে বসবাস করেন। এছাড়াও কালীগঞ্জ পৌর শাখায় আহবায়ক সাহাজাহান আলী খোকন,
সদস্য সচিব জাহেদুল ইসলাম ও ৫নং যুগ্ম আহবায়ক ইমরান হোসেন-১ এরা তিনজনই মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে চাকরি করেন। আহবাবয়ক সাহাজাহান আলীর বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আড়মুখী গ্রামে হলেও তিনি কালীগঞ্জ পৌর কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। কালীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্য সচিব সুজাউদ্দিন পিয়াল বলেন, কমিটিতে সিনিয়র-জুনিয়র মানা হয়নি। আমি আহবায়কের চেয়ে ৭ বছরের বড় হলেও তার নিচের পদ আমাকে দেওয়া হয়েছে।
মহেশপুর উপজেলা যুবদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি নিয়েও ক্ষোভ বিরাজ করছে। নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তোষ চড়িয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা যুবদলের সভাপতি আহসান হাবীব রনক আর্থিক লেনদেরে কথা অস্বীকার করে বলেন, পদবি ত হয়ে অনেকে এমন মিথ্যাচারে লিপ্ত। তিনি বলেন নতুন কমিটির কিছু লোক চাকরী করেন এটা ঠিক। তবে ঢালাও ভাবে চাকরী বা ব্যবসা করেন এটা ঠিক নয়। তিনি বলেন কমিটি গঠনের পর থেকেই নানা রকম মিথ্যা ও অপপ্রচার চলছে, যা খুবই বিব্রতকর।