ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামে ৩ দিন ধরে অবরুদ্ধ গৃহবধুকে ২ সন্তানসহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদকর্মীদের খবরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে মহেশপুর থানা পুলিশ। নির্যাতিতা গৃহবধু ওই গ্রামের লিটন মুন্সির তৃতীয় স্ত্রী। ফতেপুর গ্রামের একটি বাড়ির মধ্যে গেট ও ভেতর থেকে ১২ টি তালা ঝোলানো রয়েছে। ভিতরে ২ সন্তান নিয়ে বসে আছে গৃহবধু ফাতেমা জান্নাত। সেসময় তিনি অভিযোগ করেন, স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা করায় স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ির ভেতর তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। খাবার নেই, পানি নেই। সন্তান নিয়ে খুবই কষ্টে রয়েছেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১০ বছর আগে ঢাকায় থাকা অবস্থায় প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে আব্দুল কাদের লিটন ওরফে লিটন মুন্সির সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর বাবার বাড়ি থেকে ৬ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিয়েছেন। বিয়ের পর তার কোল জুড়ে ২ টি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান জন্মের পরই লিটন মুন্সী সৌদি আরবে চলে যায়। সম্প্রতি বাড়িতে ফিরে এসে আবারো যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে তালাকের জন্য নোটিশ পাঠায়। ২ সন্তান নিয়ে ফাতেমা জান্নাত বিপাকে পড়েন। এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশের সহযোগিতা চাইলে এর কোন সুরাহা করতে পারেননি তারা।
উপায় না পেয়ে ঝিনাইদহের আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের আওতায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর স্বামী লিটন মুন্সী বাড়িতে আটকে রেখে বাইরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, মেয়েটি আসলে অসহায়। আমি তাদের মধ্যে মিমাংসার চেস্টা করে ব্যার্থ হয়েছি। ভিকটিম ফাতেমা জান্নাতকে আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি। এ ব্যাপারে মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সংবাদ শুনে গৃহবধুকে উদ্ধা করা হয়েছে। তাকে সকল প্রকার আইনগত সহযোগিতা প্রদাণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি;