
মোসলেম উদ্দিন:
অর্থের মোহ মানুষকে দিন দিন অন্ধ করে দিচ্ছে, ভুলিয়ে দিচ্ছে সকল সম্পর্কের কথা। তাই অর্থলোভী লোকেরা নিকটাত্মীয়ের সম্পদ জবরদখল করতেও দ্বিধাবোধ করে না। এমনই এক জুলুমবাজ চট্টগ্রামের পটিয়া থানাধীন শান্তিরহাট কুসুমপুরা ১ নং ওয়ার্ডস্থ কুসুমপুরা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন আবুল খায়ের সওদাগর বাড়ীর মো: কামালের বিরুদ্ধে জুলুম নির্যাতনের অভিযোগ প্রদান করেছে তার অপর ২ চাচাতো ভাই মনজুর আলম এবং মো: বাদশা।
জানা যায়, আবুল খায়ের সওদাগর বাড়ীর জামাল আহমদের মৃত্যুর পর তার ৩ ছেলে আহমদ জালাল, আহমদ কবির এবং আহমদ নূর সকল সম্পত্তির (ওয়ারিশ সূত্রে) মালিক হন। নাল এবং ভিটে মিলে প্রায় সাড়ে ৩ কানি পৈতৃক জমি তারা বন্টন করে নেয়। বন্টনের পর থেকে প্রাপ্ত জমি যে যার মত ভোগ-দখল করতে থাকে। বাড়ীর সামনে প্রায় ১২-১৩ গন্ডার প্লটটিও তারা সমানভাবে ভাগ করে নেয়। আহমদ জালালের ছেলে কামাল ও মহিউদ্দীন তাদের প্রাপ্ত অংশে একটি ৫ তলা বিশিষ্ট দালান নির্মাণ করেন।
আহমদ কবির এবং আহমেদ নূরের ওয়ারিশ অর্থাৎ অভিযুক্ত মো.কামালের চাচাতো ভাইয়েরা তাদের প্রাপ্ত অংশে কোন প্রকার কাজ /বিক্রয় করতে চাইলে কামাল বাঁধা প্রদান করেন। মৃত আহমদ কবিরের ওয়ারিশরা নাজিম উদ্দিন নামের এক ব্যাক্তিকে তাদের অংশ হতে ২.৫ গন্ডা জমি বিক্রয় করেন। কিন্তু উক্ত জমি তাকে বুঝিয়ে দিতে গেলে কামাল বাধা দিয়ে বলে সেখানে তারও অংশ রয়েছে।
১৭ই নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হওয়ার কথা থাকায় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: জাবের, ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: নূরুল আলমসহ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে ক্রেতা নাজিমকে জমি বুঝিয়ে দিয়ে খুঁটি দেওয়া হচ্ছে।
এসময় পুলিশের একটি টিমও সিভিল পোশাকে উপস্থিত ছিল।এসময় কামাল ঘটনাস্থলে এসে বলে, খুঁটি যেভাবে বসানো হয়েছে ঠিক সেভাবে উপড়ে ফেলা হবে। আমি যা বলি তাই হবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মো: জাবের বলেন, নিজের এলাকায় কোন বিশৃঙ্খলা হউক সেটা চাই না। ওরা চাচাতো-জেঠতো ভাইয়েরা জায়গার বিষয়ে উশৃংঙ্খল হলে এলাকায় একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে তাই আমরা সামাজিকভাবে এই সমস্যার সমাধানে একত্রিত হলাম। আশা করতেছি সুন্দরভাবে এই সমস্যার সমাধান হবে।
মো: বাদশা বলেন, আমার জেঠতো ভাই কামালের কারণে আমাদের দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগে আছে। তার অংশ তার দখলে থাকার পরেও আমাদের অংশ জবরদখল করার জন্য এই ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এই ব্যাপারে আমি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করি।
মো: মনজুর আলম বলেন, সবার অংশ সমানভাবে বন্টিত হওয়ার পরেও কামাল এবং তার ভাই মহিউদ্দীন অকারণে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের উপর বারবার হামলা চালাচ্ছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের অংশের জমি জবরদখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আমাদের অংশের জমি আমরা বিক্রি করলে উনার সমস্যা কোথায় ? ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরো জটিল রূপ ধারণের আশঙ্কা প্রকাশ পূর্বক তিনি প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
এলাকাবাসী জানান, কামাল হলো টাকার কুমির। তার সাথে বিশাল একটি কিশোর গ্রুপ কাজ করে। তাই সে কাউকে পাত্তা দেয় না। যে কারো উপর অন্যায় করতে চিন্তা করে না। সম্পত্তির লোভে আপন চাচাতো ভাইদেরও ছাড় দিচ্ছে না।