
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) ও বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভা-ারী (ক.) এর ৯২তম খোশরোজ শরিফ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল আজ ১৯ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে (রীমা কনভেনশন হল) অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম মহানগর মাহফিল এন্তেজামিয়া কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন নগর মাইজভা-ারী গাউসিয়া হক কমিটির সভাপতি এম মাকসুদুর রহমান হাসনু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন।
এতে বক্তারা বলেন, দ্বীন প্রচার ও মানুষের সেবা করাই আল্লাহ পাকের ওলীদের জীবন মিশন। তেমনি অনন্য আধ্যাত্মিক শক্তিতে বলীয়ান বিশ্বঅলি শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভা-ারী (ক.) আজীবন দ্বীন প্রচারে ও জনকল্যাণে নিবেদিত থেকে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাঁর নির্লোভ নির্মোহ সাদাসিধে জীবনাচার ও মানবসেবায় আত্মনিবেদন দেখে সর্বস্তরের মানুষ তাঁর প্রতি মোহাচ্ছন্ন হতো। বিশ্বঅলির (ক.) স্বার্থত্যাগী নির্লোভ জীবনাচারে অনেক শিক্ষণীয় দিক রয়েছে। আজকের স্বার্থের সংঘাত ও আমিত্বের প্রচারের এই সময়ে বিশ্বঅলির (ক.) মতো ত্যাগী নির্লোভ নিরহংকার আল্লাহওয়ালা খাঁটি দ্বীনদার ব্যক্তিত্বের বড় অভাব আমরা উপলব্ধি করছি।
বিশ্বঅলির (ক.) পথরেখা মতো চলে ইহজাগতিক কল্যাণ ও পরকালীন অনন্ত জীবনে মুক্তি ও নাজাতের সৌভাগ্য অর্জনের তাগিদ দেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, বিশ্বঅলির জীবনাদর্শে প্রিয় নবীজীর (দ.) বাস্তব নমুনা ও প্রতিচ্ছবি দৃশ্যমান ছিল। প্রিয় নবীর (দ.) ইসলাম তথা দ্বীনি মিশনকে সর্বোত্তম উপায়ে তিনি এদেশসহ বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছিলেন। মানবতা, দয়া, মহানুভবতা ও সর্বজনীন মানবপ্রেমই ছিল বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভা-ারীর (ক) জীবন দর্শন। ঈদে মিলাদুন্নবীর (দ.) তাৎপর্য এবং বিশ্বঅলি শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভা-ারী (ক) এর জীবন, কর্ম ও দর্শনের ওপর আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) গবেষক মুহাম্মদ গোলাম রসূল,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম বোরহান উদ্দিন, লোকসংগীত গবেষক সাংবাদিক নাসির উদ্দিন হায়দার, অধ্যাপক ড. আল্লামা জাফর উল্লাহ, আল্লামা তারিকুল ইসলাম ও সংগঠক আলহাজ্ব দিদারুল আলম চৌধুরী। চট্টগ্রাম মহানগর সমন্বয়কারী সংগঠক মুহাম্মদ আশরাফুজ্জামান আশরাফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আলহাজ্ব নুরুল করিম নুরু। অনুষ্ঠানে অতিথি ও আলোচক ছিলেন শেখ মতিউর রহমান বাবুল, শেখ মাকসুদুর রহমান দুলাল,
আ ব ম খোরশিদ আলম খান, শওকত হোসাইন, এস.এম শাহাবুদ্দিন আহমদ, মেজবাহ উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন ছিদ্দিকী, মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম, নাছির মুহাম্মদ, মোরশেদ করিম, ওমর ফারুক, মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, বদিউর রহমান, ডা: এস এম কামরুজ্জামান, রেজাউল করিম রুবেল, এস এম জাবেদ, সরওয়ার চৌধুরী, এস এম মনজু, শাহ্ নেওয়াজ, মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। প্রধান অতিথি খোরশেদ আলম সুজন বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভা-ারী (ক.)’র সঙ্গে তাঁর সান্নিধ্য অর্জনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থে আল্লাহর মহান অলি। তাঁর মধ্যে কোনো পার্থিব লোভ মোহ ছিলনা। তাঁর মতো স্বার্থত্যাগী সাদাসিধে খাঁটি বুজুর্গ ব্যক্তিত্ব আমি জীবনে খুব কম দেখেছি।
বিশ্বঅলি (ক.) অসীম আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে আজীবন সর্বস্তরের মানুষের কল্যাণ করে গেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ পাকের মহান ওলীগণ আমাদের আধ্যাত্মিক দিশারী। তাঁরা আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে সার্বিকভাবে মানবজাতির কল্যাণ করে থাকেন। তিনি বলেন, রুহ ও অন্তরের বিশুদ্ধতা ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য অর্জন সম্ভব নয়। ইসলাম শান্তির ধর্ম। তাই ইসলামের নামে উগ্রবাদী তৎপরতায় জড়িত হয়ে মানুষের শান্তি বিনষ্টে যারা লিপ্ত তারা অবশ্যই বিপথগামী। এদের থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।
ওলী-মনীষীদের পথে মতে চলে আমরা নিজেদের জীবনকে ধন্য ও কামিয়ার করতে পারি। বিশ্বঅলির (ক) মতো ওলীগণই হচ্ছেন আমাদের আলোকবর্তিকা তথা বাতিঘর। তাঁরা আমাদেরকে সঠিক রাস্তা দেখিয়ে মুক্তির বন্দরে পৌঁছে দেন। সালাত সালাম শেষে বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার পরিত্রাণ, যাবতীয় দুর্যোগ মহামারি থেকে সুরক্ষা এবং দেশ ও বিশ্ববাসীর ওপর আল্লাহর রহমত কামনায় মুনাজাত করা হয়।