
নিউজ ডেস্ক:
১১৫০ থেকে ১১৬০ সালের মধ্যে কোনো একসময়ে জন্মগ্রহণ করেন চেঙ্গিস খাঁন। তার ছেলেবেলা কাটান ঘোড়া চালানো শিখে। মাত্র ৬ বছর বয়সে নিজ গোত্রের সঙ্গে শিকার অভিযানে যোগ দেন চেঙ্গিস খাঁন। বাল্যকালেই তার বাবাকে হত্যা করা হয়। এরপর মায়ের কাছ থেকেই সব শিক্ষা-দীক্ষা গ্রহণ করেন চেঙ্গিস খাঁন।এক সাধারণ মানুষ থেকে নিজ দক্ষতায় বিশাল সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন চেঙ্গিস খাঁন। যদিও তিনি অতি নির্মম ও রক্তপিপাসু নেতা হিসেবে পরিচিত ছিল সারা পৃথিবীতে।
তিনি ইতিহাসের অন্যতম বিখ্যাত সেনাধ্যক্ষ ও সেনাপতি। তিনি মঙ্গল গোষ্ঠীগুলোকে একত্রিত করে মঙ্গল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। প্রশান্ত মহাসাগর এবং ক্যাস্পিয়ান সাগরের আশপাশের সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন।লাইভ সায়েন্সের এক নিবন্ধ অনুসারে, রোমান সাম্রাজ্যের চেয়েও আঞ্চলিক দিক থেকে আড়াই গুণ বড় ছিল মঙ্গল সাম্রাজ্য। ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের সময় চেঙ্গিস খাঁন মঙ্গল জাতির গোড়াপত্তন ঘটানোর পর বিশ্বজয়ে বের হন চেঙ্গিস খাঁন।
চীন থেকে তিনি যুদ্ধবিদ্যা ও কূটনীতির মৌলিক কিছু শিক্ষা লাভ করেন। প্রথমেই জিন রাজবংশকে পরাজিত করেন চেঙ্গিস খাঁন ৬৫ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তখন চীনের জিয়া রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিলেন। তার মৃত্যু নিয়ে যুগে যুগে বিজ্ঞানীরা নানা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, ঘোড়া থেকে পড়ে মারা গেছেন। আবার কারও মতে, খোঁজাকরণের কারণে তিনি মারা যান। এ ছাড়াও যুদ্ধরত অবস্থায় নিহত হন বলেও যুক্তি-প্রমাণ রয়েছে। তবে কোনোটিই সঠিক বলে প্রমাণ হয়নি।সম্প্রতি লাইভ সায়েন্সের এক গবেষণায় জানা গেছে, বিখ্যাত এ নেতার মৃত্যুর কারণ ছিল সংক্রামক রোগ। তখন বুবেনিক প্লেগ রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল।
৮ থেকে ৯ দিন জ্বরে আক্রান্ত থেকে চেঙ্গিস খাঁন মারা যান। তিনি সংক্রামক ব্যাধিতেই মারা যান। তাকে হত্যা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।প্রথমদিকে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার হদিস পান গবেষকরা। তবে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডের ফিল্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও প্যালিও প্যাথলজিস্ট ফ্রান্সেসকো গ্যালিস বলেছেন, ‘তিনি জ্বরে আক্রান্ত থাকলেও টাইফয়েডের লক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত বমি বা পেটে ব্যথা তার ছিল না।’গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক, ইতালির কাতানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানী ড. এলেনা ভারোটো বলেছেন, ‘চেঙ্গিস খাঁনের মৃত্যু নেতৃত্বের উপরে রোগের প্রভাবের একটি সাধারণ উদাহরণ হিসেবে কাজ করতে পারে।
কোনো রোগই ধনী বা গরীবের জন্য হয় না। চেঙ্গিস খাঁনের মৃত্যু ‘বর্তমান সময়ের নেতাদের জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে’।চেঙ্গিস খাঁনের মৃত্যুর পর থেকে ৮০০ বছর কেটে গেলেও হাজারো গবেষক তার হারানো সমাধির সন্ধান পাননি। বিবিসি’র এক নিবন্ধে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, চেঙ্গিস খাঁনের মৃত্যুর পরে তাকে ‘গোপনে দাফন করা হয়েছিল’।
সবশেষে চেঙ্গিস খাঁনের সমাধির যেন কোনো প্রমাণ না থাকে; তাই সমাধির উপর ১ হাজার ঘোড়া নিয়ে ঘোড়সাওয়াররা দৌড়ায়। ওইসব ঘোড়সাওয়ারদেরও পরবর্তীতে হত্যা করা হয়েছিল। কোনো ধরনের প্রমাণই মেলেনি চেঙ্গিস খাঁনের সমাধির।