
মাহমুদুল হাসান:টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
মধুপুর উপজেলার প্রায় এক হাজার ৩৫৬ শিশু শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। অভাব-অনটনে ছেলেরা, বাল্যবিয়ের কারণে মেয়েরা এবং আরও কিছু কারণে এ অঞ্চলের এসব শিশু শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন থেকে ছিটকে পড়েছে।অনুসন্ধান করতে গিয়ে এমন প্রমান পাওয়া গেছে।অষ্টম শ্রেণীর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা পাস হবার আগেই তার ঐ দুই কারনে ঝরে পরতেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে মধুপুর উপজেলার প্রাথমিক স্তরের স্কুলপর্যায়ে পঞ্চম শ্রেণীতে ৫ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী ডিআরভুক্ত হয়েছিল। যেখানে মেয়ে ছিল ২ হাজার ৮৩৭ এবং ছেলে ছিল ২ হাজার ৫১৩। কিন্তু সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয় ৫ হাজার ১৮০ শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেই ঝরে পড়েছে ১৭০ শিশু।পরীক্ষার ফলাফলে ৫ হাজার ১৫২ জনের মতো উত্তীর্ণ হয়। পাসের হার শতকরা ৯৯.৪৬ ভাগ। অনুত্তীর্ণ আরও ২৮ জনের অধিকাংশই যুক্ত হয়েছে ঝরে পড়ার তালিকায়।
মাদ্রাসা স্তরের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। একই শিক্ষাবর্ষে ছেলে ৩৬৯ ও মেয়ে ৩৭৩ জন মিলে মোট ৭৪২ শিশু শিক্ষার্থী ডিআরভুক্ত হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৬৫৫ জন। পরীক্ষার আগেই ঝরে যায় ৮৭ জন ছেলেমেয়ে। তবে এক্ষেত্রে পাসের হার ছিল শতভাগ। এ শিক্ষার্থীরাই তিন বছর পর চলতি বছর ২০১৮ সালের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্কুলপর্যায়ে উপজেলার ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৯৯৪ জন ডিআরভুক্ত হয়েছে। মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, রানী ভবানী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও শোলাকুড়ি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষা দেয়ার কথা।
অনুসন্ধানে যানা গেছে, পরীক্ষায় বেশ কিছু শিক্ষার্থী অংশই নিচ্ছে না। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, দু’চারটা করে প্রবেশপত্র বুধবার পর্যন্ত অফিসে পড়ে আছে। অভিভাবক পর্য়ায়ে যোগাযোগ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জেনেছে, মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। সংসারের অভাব-অনটন দূর করার লক্ষ্যে দু’চার পয়সা রোজগারে ছেলেরা কাজে লেগে গেছে।স্কুলপর্যায়ে ১ হাজার ৩৫৬ জন ছাত্র ঝরে পড়েছে। শতকরা হিসেবে ঝরে পড়ার হার ২৭.১২ ভাগ।
শিক্ষক ও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, অনুপস্থিত এ ৮৭ মেয়ের প্রায় সবারই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়েছে। এটি সত্যি উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বজলুর রশীদ খান।
সরকারের উপবৃত্তি প্রকল্পসহ নানা প্রকল্প আগের মতো চালু থাকলে ঝরে পড়ার হার অনেক কমে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমএ রশিদ।