
চলতি বছরের শুরুতে বড় ধরনের একটি সাইবার হামলার জন্য চীনকে দায়ী করেছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বৈশ্বিক সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির জন্য তারা সোমবার (১৯ জুলাই) চীনের নিন্দা জানিয়েছে।এতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও কানাডাও রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকিন বলেন, চীনের সাইবার হামলা আমাদের অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।-খবর রয়টার্স ও বিবিসির
মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জ সার্ভারকে হামলার নিশানা করা হয়েছিল। এতে বিশ্বজুড়ে অন্তত ৩০ হাজার সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যুক্তরাজ্য বলছে, চীনা সরকার-সমর্থিত শক্তি এই সাইবার হামলায় ভূমিকা রেখেছে। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, চীনা ভূখণ্ড থেকে এই হামলা এসেছে।যুক্তরাষ্ট্র ও বিদেশে কয়েক ডজন কোম্পানি, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি সংস্থাকে হ্যাকিংয়ের টার্গেট করায় চার চীনা নাগরিককে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয়। এই চার জনের মধ্যে তিন চীনা নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও একজন চুক্তিবদ্ধ হ্যাকার রয়েছেন।তবে এ নিয়ে জানতে চাইলে ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে চীনা কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা নিজেরাও হ্যাকিংয়ের শিকার এবং সব ধরনের সাইবার হামলার বিরোধী।সাইবার হামলার নিন্দা জানিয়ে চীনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা শক্তিগুলোর এই বিবৃতি বড় ধরনের জোটেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। মার্কিন অভিযোগ ছাড়িয়ে চীনের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না থাকার বিষয়টি এতদিন সবার নজরে এসেছিল। মাসখানেক আগে জি৭ ও ন্যাটো সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক নিয়মভিত্তিক শাসন ব্যবস্থার জন্য চীন এখন হুমকি।বিশ্বেরক দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশটির বিরুদ্ধে এভাবে ঐক্যবদ্ধ সরব হওয়ায় সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, ঘটনা যে দিকে মোড় নিয়েছে, তা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সংঘাতিক।মাইক্রোসফটের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা এই হামলা চালিয়েছে। এতে এমন একটি ব্যাকডোর রেখে যাওয়া হয়, যাতে তারা মাইক্রোসফটে আরও প্রবেশের সুযোগ পান। এছাড়া অন্য হ্যাকাররাও সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চেষ্টা করেন।
যুক্তরাজ্য বলছে, এই সাইবার হামলার কারণে বড় ধরনের গুপ্তচরবৃত্তি আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এতে ব্যক্তিগত তথ্য ও মেধাস্বত্ব হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব।
চীনারা যে ব্যাকডোর ব্যবহার করেন, অন্য হ্যাকাররা সেই সুযোগ নিয়ে নেন। এতে র্যানসামওয়্যার হামলা ও গুপ্তচরবৃত্তির সুযোগ বেড়ে যায়।ব্রিটেনে ৭০টি আক্রান্ত সংস্থার জন্য পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কেন্দ্র (এনসিএসসি)। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জ সার্ভারে চীনা রাষ্ট্রীয় সমর্থিত সাইবার হামলা অপরিণামদর্শী আচরণ। যা তাদের পরিচিত আচরণের মতোই। কাজেই এই পরিকল্পিত সাইবার-নাশকতা অবশ্যই তাদের বন্ধ করতে হবে।