
মিলি হত্যা মামলায় বিএনপি নেতা ও তার ছেলে সিআইডি হেফাজতে ঠাকুরগাঁওয়ের আলোচিত স্কুলশিক্ষক মিলি চক্রবতী হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিএনপি নেতা ও ছেলেকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের জিঞ্জাসাবাদের জন্যে আটক করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই সকালে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় শহরের মোহাম্মদ আলী সড়কের নিজ বাসার পাশের গলিতে মিলি চক্রবর্তীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।বিষয়টি নিয়ে শহর জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ, সিআইডি, পিবিআই মাঠে নামেও কাউকে আটক করেনি।এর দুইদিন পর ১০ জুলাই পুলিশ বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর মামলার ২৬ দিন পর গত ৫ আগস্ট মামলাটি হস্তান্তর করে নেয় সিআইডি।
৪৫ বছর বয়সী মিলি ‘প্রারম্ভিক কিন্ডারগার্টেন’ নামে একটি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। মিলির স্বামী সমীর কুমার রায় পঞ্চগড় চিনিকলে কর্মরত।
শহরের লোটো জুতার দোকানের শো–রুমের মালিক তিনি। এ দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। দুই সন্তানেরই বিয়ে হয়েছে। তাদের বাড়ি শহরের তাঁতীপাড়ায়।মামলার এজাহারে বলা হয়, মিলি চক্রবর্তীকে কে বা কারা হত্যা করে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তার মরদেহ শহরের তাঁতিপাড়াস্থ বাটা শোরুমের নির্মাণাধীন একটি ভবনের মাঝে সরু গলিতে ফেলে রাখে।
প্রাথমিকভাবে এমন তথ্য পাওয়ার পর মৃতের পরিবারকে অভিযোগ দেয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু কোনো কারণে তারা অভিযোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।মামলার বাদী এসআই নির্মল কুমার রায় বলেছিলেন, মিলি চক্রবর্তীর মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাটি আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে।
তাই সত্য ঘটনা উদঘাটনের জন্যই নিজে বাদী হয়ে মামলাটি করেছি।এদিকে সুরতহাল রিপোর্ট করার সময় গৃহবধূর ডান হাতের কনুই থেকে আঙ্গুল পর্যন্ত, বাম হাতের নিচের অংশ, দুই হাতের নখ, তালু, আঙ্গুল, পায়ের তালু, পায়ের আঙ্গুল ও বাম হাতের কবজির উপরে সুতা বাঁধা স্বাভাবিক পাওয়া যায়।তবে মাথার চুল খোপা বাঁধা, চোখের ভ্রুর চুল, চোখের পাতা আংশিক পোড়া ছিল।এছাড়া কোমড়ের নিচের অংশ থেকে পায়ের তালুর ওপরের অংশের বিভিন্ন জায়গায় পোড়ানো ছিল।
কপালের চামড়া, জিহ্বা, ঠোঁট, থুতনি, কান, গলা, বুক, পেট, তলপেট ও ডান হাতের বাহু থেকে কনুই পর্যন্ত ও বাম হাতের কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত এবং যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথ ঝলসানো এবং প্রায় উলঙ্গ উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় মরদেহটি পাওয়া যায়।অন্যদিকে তার নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিলো এবং জিহ্বা বাহিরে দাঁত দিয়ে কামড়ানো অবস্থায় ছিলো।তার শরীরের ডান হাতের বাহুর জামার কিছু অংশ এবং দুই পায়ের হাঁটুর নিচে পায়জামার কিছু অংশ পোড়া অবস্থায় দেখা গেলেও পোশাকের বাকি অংশ পুড়ে ছাই হওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়।