বাজেট ঘাটতি আড়াই লাখ কোটি ডলার! চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি প্রায় ২ লাখ ৫৪ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতিকে সচল করতে প্রচুর অর্থ ব্যয় আর প্রণোদনা দেওয়ায় এ ঘাটতি হয়েছে।

এটি মার্কিন ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজেট ঘাটতি। চলতি অর্থবছরে শুধু জুলাই মাসে বাজেট ঘাটতি হয়েছে ৩০ হাজার কোটি ডলার। এই আকারও আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। ২০২০ সালের জুলাই মাসের তুলনায় বেড়েছে বাজেট ঘাটতি।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া ২০২০ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার। তবে এক প্রতিবেদনে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট জানায়, জুলাই পর্যন্ত দেশটির বাজেটে যে পরিমাণ ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ কম।
ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট জানায়, বাজেট ঘাটতির পরিমাণ কমার কারণে বোঝা যায় মার্কিন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কারণে করপোরেট কর আহরণে যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একই সময়ে প্রণোদনা কার্যক্রম কমে যাওয়ার বিষয়টিও বাজেট ঘাটতি কমাতে ভূমিকা রেখেছে।
মার্কিন কংগ্রেস বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ, বেকার ভাতা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় আর্থিক সহায়তা নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রয়োগে ২০২০ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছিল। এক পূর্বাভাসে মার্কিন কংগ্রেশনাল বাজেট (সিবিও) অফিস জানায়, চলতি অর্থবছরে মার্কিন বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ৩ লাখ কোটি ডলারের সামান্য কিছু কম হতে পারে। একই সঙ্গে ২০২২ অর্থবছরের জন্য বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আগামী অর্থবছরে মার্কিন বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলারে নেমে আসতে পারে বলে আশা করছে সিবিও।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলতি বছরে মার্কিন বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটি ডলার, যা গত বছরের ঘাটতির পরিমাণ ৩ লাখ ১৩ হাজার কোটি ডলারের সামান্য বেশি। গত বছরের আগে মার্কিন বাজেটে সর্বোচ্চ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার, যা মহামন্দার সময় ২০০৯ অর্থবছরে হয়েছিল।চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আয়ও রেকর্ড ৩ লাখ ৩২ হাজার কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরে করপোরেট কর সংগ্রহের হার গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬১ শতাংশ বেড়ে ৩২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বাজেট ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৮৬ হাজার কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি।