
যেতে পারেনি বিএনপি, কালুরঘাটে সমাবেশ আওয়ামী লীগের পুলিশের বাধায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা যেতে না পারলেও কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের সামনে সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের সামনে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলটির সমাবেশ চলে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রোববার দুপুরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপির। পাল্টা কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগও।এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, দুই দলের কাউকেই সেখানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।রোববার সকালে কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতারা কালুরঘাট যেতে চাইলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
একাত্তরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পড়েছিলেন, দলের প্রতিষ্ঠাতার স্মৃতিবিজড়িত সেই স্থান তাই বিএনপির কাছে গুরুত্বপূর্ণ।তবে আওয়ামী লীগ নেতারা রোববারের সমাবেশ থেকে বলেন, বিএনপি ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ স্বাধীনতার ঘোষণার ‘নাটক’ সাজাতে চায়।সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ জিয়া স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেছিলেন।
২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণাটি প্রথম পাঠ করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ হান্নান।“এই ঘোষণাটি পাঠের পর তখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেয় যে, প্রতিরোধ যুদ্ধরত কোনো সামরিক কর্মকর্তার মাধ্যমে ঘোষণাটি পাঠ হলে জাতি উজ্জীবিত হবে। তাই প্রতিরোধ যুদ্ধের রণাঙ্গন থেকে পলাতক মেজর জিয়াকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের করলডাঙ্গা পাহাড় থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ কালুরঘাটে নিয়ে আসেন এবং স্বাধীনতার ঘোষণাটি তার দ্বারা পাঠ করানো হয়।
আসলে এটাই ছিল প্রতিরোধ যুদ্ধের একটি রণ কৌশল। এটাই ইতিহাসের প্রকৃত সত্য।”তিনি বলেন, “যদি ধরে নেওয়া যায় জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাহলে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন ২৬ মার্চই রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করেছিল, ২৭ মার্চ তো স্বাধীনতা দিবস পালন করেনি। আজ কেন বিএনপি ২৭ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালনের নাটক সাজাতে চায়?”
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ঘোষণা অনুযায়ী আমজনতা স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছিল। এটাই হচ্ছে ঐতিহাসিক সত্য। এই সত্যকে যারা বিশ্বাস করে না, তারা প্রকৃত অর্থেই স্বাধীনতার শত্রু। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এসেও এরা এখনো নির্মূল হয়নি। তাই বঙ্গবন্ধুর ভাষায় বলতে চাই, আমরা যদি হুকুম দিতে নাও পারি তাহলে যার যা কিছু আছে তা নিয়েই ইতিহাস বিকৃতকারী স্বাধীনতার শত্রুদের নির্মূল করতে হবে।”
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈমুদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, উপদেষ্টা শফর আলী।নগরীর বহদ্দারহাট মোড়ে আলাদা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।এদিকে বিএনপি নেতারা কালুরঘাট যেতে না পেরে নগরীর ষোলশহরে দুই নম্বর গেইটের বিপ্লব উদ্যানে ফুল দিয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে সমাবেশ করে।