সাবিনা-সানজিদাদের বেতন কত? সাবিনাদের হাত ধরে ১৯ বছরের ট্রফি খরা ঘুচিয়েছে দেশের ফুটবল। তাদের এ গৌরবময় অর্জনকে স্বীকৃতি দিতে রাজসিক সব সংবর্ধনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, এরপর লাইমলাইটে থাকবেন তো সাবিনারা? জামাল ভূঁইয়াদের ব্যর্থতার ভিড়েও বাংলাদেশকে একের পর এক অর্জন এনে দেয়া সাবিনারা পাবেন তো যোগ্য সম্মানটুকু?
নারী ফুটবলে সফলতার গল্প শুরু সে ২০১৭ সাল থেকে। বয়সভিত্তিক ফুটবল থেকে এশিয়ান ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্বের ঝান্ডা উড়িয়ে আসছিল মারিয়া মান্ডা, শামসুন্নাহার, তহুরা খাতুন, আনাই মোগিনী, আনুচিং মোগিনী, মনিকা চাকমা ও রূপনা চাকমারা। তাদের হাত ধরে বয়সভিত্তিক সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তিনবার শিরোপা জেতে বাংলাদেশ।
আর ২০২২ সালে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে তো তারা ইতিহাসই গড়েছেন। সাবিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জিতিয়েছে প্রথম শিরোপা। এর আগে মালয়েশিয়ার মতো শক্তিশালী দলকেও প্রীতি ম্যাচে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল নারীদের এ দলটি। যেখানে ২০২২ সালে জামাল ভূঁইয়ারা একই দেশের বিপক্ষে উড়ে গিয়েছিল ১-৪ গোলের ব্যবধানে।
তবে দেশকে এত এত সাফল্য এনে দিলেও তাদেরকে দেয়া হয় না যথাযথ সম্মানটুকু। দেশের নারী ফুটবলের বেতন কাঠামো একজন দিনমজুরের চেয়েও অনেক কম। সাবিনা-সানজিদাদের বেতন কাঠামো শুনলে অবাক হবেন আপনিও! ‘এ’ ক্যাটাগরির ফুটবলারদের মাসিক বেতন ১২ হাজার। ‘বি’ এবং ‘সি’ ক্যাটাগরির খেলোয়াড়দের বেতন ১০ হাজার এবং ৮ হাজার।
অন্যদিকে দীর্ঘ সময় কোনো ফল আনতে না পারলেও চড়া বেতন পাচ্ছেন পুরুষ দলের ফুটবলাররা। জামালদের কারো কারো বছরে আয়টা ছাড়িয়ে যায় কোটি টাকাও। এমন বৈষম্যের কারণ হিসেবে বাফুফে অবশ্য নারী দলের স্পন্সর সঙ্কটের অজুহাত দিচ্ছে। ক্লাব ফুটবলে অবশ্য কিছুটা অর্থ সম্মান পান নারীরা। ক্লাব ফুটবলে মেয়েদের সর্বোচ্চ বেতন দিয়ে থাকে বসুন্ধরা কিংস।
সাবিনা-সানজিদাদের বেতন কত? যেখানে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানি সরকার এবং সানজিদা আক্তাররা ক্যাটাগরি ভেদে ৪-৫ লাখ টাকার মতো পেয়ে থাকেন। সেটাও অবশ্য পুরুষদের তুলনায় বেশ কম।বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন অবশ্য শিগগিরই নারীদের বেতন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে ফুটবলে পদার্পণ করা মেয়েরা শেষ পর্যন্ত পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।