
মাহমুদুল হাসান:টাঙ্গাইল প্রতিনিধি;
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।এর মধ্যে কিছু বর্তমান এমপি বাদ পরেছে এবং কিছু নতুন মুখ যুক্ত হয়েছে।সে ধারাবাহিগতায় টাঙ্গাইলের আটটি আসনের মধ্যে ৪টিতে নতুন মুখ এসেছে।বাদ পড়েছেন বর্তমান ৪ জন সংসদ সদস্য।টাঙ্গাইলের ৮টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবার আসায় দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৭৪ জন প্রার্থী।
টাঙ্গাইল-২, টাঙ্গাইল-৩, টাঙ্গাইল-৬ ও টাঙ্গাইল-৮ আসনগুলোতে নতুন প্রার্থী হয়েছেন।টাঙ্গাইলের আরএকটি আসনে আওয়ামী লীগের জায়গায় ভাগ বসাতে পারে শরিক দল জাতীয় পার্টি।
নৌকার টিকেট যারা পেয়েছেন তারা হলেন;
ভূঞাপুর-গোপালপুর(টাঙ্গাইল-২)
আসনে চমক দেখিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনির। ১৬ জন প্রত্যাশীকে টপকে তিনি মনোনয়ন লাভ করেছেন।তিনি জার্মান আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যার পর হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনে সক্রিয় থেকে আলোচনায় চলে আসেন।
বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক সচিব খন্দকার আসাদুজ্জামান বয়সের ভারে নুজ্ব্য। প্রথম দিকে তিনি নির্বাচন করবেনা না বলে জানা যায়। এর প্রেক্ষিতে তার ছেলে এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে দলীয় মনোনয়ন কেনার সময় খন্দকার আসাদুজ্জামান ও তার ছেলে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। কিন্তু তারা কেউ দলের মনোনয়ন পাননি।
ঘাটাইল(টাঙ্গাইল-৩)
আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার পিতা আতাউর রহমান খান। আতাউর রহমান খান টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহম্মেদ হত্যা মামলায় রানা কারাগারে রয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আত্মসমপন করে নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।বেশ কয়েকবার নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি। বর্তমানে এ মামলা চলমান রয়েছে।ঘাটাইলে দুইবারের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে বলে আসনটি ধরে রাখতে তার পিতাকেই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এখান থেকে ১১ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন।
দেলদুয়ার-নাগরপুর(টাঙ্গাইল-৬)আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন নতুন মুখ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আহসানুল ইসলাম টিটু।এতে বাদ পড়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধের বাতেন বাহিনীর প্রধান খন্দকার আব্দুল বাতেন। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিমসহ আরো ১০ জন।
আহসানুল ইসলাম টিটু ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে পরাজিত হন। তার বাবা মকবুল হোসেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য।
সখীপুর-বাসাইল(টাঙ্গাইল-৮)আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন নতুন মুখ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের। তিনি সরকারি সা’দত কলেজের দুইবারের ভিপি ছিলেন।এর জন্য মনোনয়ন তালিকা থেকে ছিটকে পড়েছেন বর্তমান এমপি অনুপম শাজাহান জয়। অনুপম শাজাহান জয়ের পিতা প্রয়াত শওকত মোমেন শাজাহান ১৯৮৬, ১৯৯৯ এর উপ-নির্বাচন, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি মৃত্যুবরণ করায় উপ-নির্বাচনে তার ছেলে অনুপন শাজাহান জয় এমপি নির্বাচিত হন।
বর্তমান সংসদ সদস্যরা অন্য চারটিতেই মনোনয়ন পেয়েছেন। তারা হলেন— টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে ছানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে একাব্বর হোসেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর নিজ নিজ এলাকার কর্মী সমর্থকরা আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
টাঙ্গাইলে ১২টি উপজেলায় ৮টি আসন। এ জেলায় মোট ভোটার ২৭ লাখ ৮২ হাজার ৮৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ জন, মহিলা ১৪ লাখ ৩ হাজার ৭৯৭ জন।